কাউনিয়া প্রতিনিধি ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ , ১:৫১ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কাউনিয়া উপজেলার দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষেরা তীব্র শীত ও কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছে। তীব্র শীত ও ঠান্ডায় শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট সহ ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। তিস্তার চরাঞ্চল সহ উপজেলার দরিদ্র অসহায় মানুষেরা শীত বস্ত্রের অভাবে চরম দূর্ভোগে পড়েছে। তারা সরকারের নিকট কম্বল চাদর সহ শীত বস্ত্রের দাবি জানিয়েছেন।
গত ৬ দিন ধরে ভোর থেকে সন্ধা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় কাউনিয়া উপজেলার পুরো এলাকা। সোমবার দুপুরেও এ এলাকায় সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। এতে কনকনে ঠাণ্ডা দেখা দেয়। এ কারণে স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীর উপস্থিতি উল্লেখ যোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আফরোজা পারভীন বলেন কাউনিয়া সহ রংপুরের আশপাশের এলাকায় সোমবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১০°৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস দুপুরে ছিল ১৫° ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অবস্থা আরো দুদিন থাকবে। তবে বৃষ্টির সম্ভবনাও রয়েছে। রাস্তায় হেড লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে। ঘন কুয়াশায় বাড়ছে সড়ক দূর্ঘটনা। ইরি বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে হলুদ বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। আলু খেতে দেখা দিয়েছে নাবি ধব্বজা (ব্লাইড) রোগ। এতে করে চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী গ্রাম সহ সারা উপজেলার খেটে খাওয়া ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে শীত ও ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে পড়েছে। কাজকর্মে যেতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। নাজিরদহ গ্রামের রিকশা চালক বেটল মিয়া বলেন ৬ দিন থাকি সূর্যের মুখ দেখিনা পেটের ক্ষুধার জ্বালা দমবার জন্যে ঠান্ডাতে রিকশা নিয়া বেড়াইছো কিন্ত যাত্রী নাই ঠান্ডাতে কায়ো ঘড় থাকি বেড়বার চায় না। ঠিক মত কামাই রোজকার না থাকায় খুব কষ্টে আছি।
তীব্র শীত ও কনকনে ঠান্ডায় শ্বাস কষ্ট, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ডায়রিয়া সহ নানা রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশু ও বৃদ্ধরা শীত জনিত রোগে বেশি বেশি আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। শীত নিবারণে খড় কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছে দরিদ্র মানুষ। এছাড়াও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। গরু, ছাগল,মহিষের গাঁয়ে চটের বস্তা ঝুলিয়ে দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছে কৃষকরা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহসান হাবীব সরকার জানান এ উপজেলায় ৩ হাজার ১২০ টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা ইতিমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। আরো বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করা হয়েছে।