বিবিধ

কাউনিয়ায় পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে কলি রানী

  এস এম রাফি ১৮ মে ২০২৩ , ৬:৫৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

জহির রায়হান কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ- দৃঢ় মনোবল আর ইচ্ছা শক্তি থাকলে যে নিদিষ্ট লক্ষে পৌঁছা যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ কাউনিয়ার কলি রানী (১৬)। সে পঙ্গুত্ব কে বাঁধা মনে না করে শারিরীক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে হাতের বদলে পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। কলি রানী কাউনিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মোফাজ্জল হোসেন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে চলতি এসএসসি পরীক্ষা -২০২৩ এ অংশ নিচ্ছে। সে উপজেলার গদাই গ্রামের রুপালী রানীর কন্যা। তার পিতা মনোরঞ্জন রায় কলি যখন গদাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে তখনই পরলোকগমন করেন। তারা ৩ ভাই ৩ বোন। কলি রানী সবার ছোট। তার মা রুপালি রানী জানায় জন্ম থেকেই তার মেয়ের হাতের আগুল নেই, হাত বাকা ও ছোট, কলম ধরতে পারে না। মেয়ের অদম্য ইচ্ছা শক্তি ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে ডান পা দিয়ে লেখা শুরু করে। ধীরে ধীরে লিখতে লিখতে সে দ্রæত গতিতে লেখার কৌশল আয়ত্ব করে। সে যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম যাওয়া শুরু করে তখন তার সহ পাঠিরা তাকে নিয়ে হাসাহাসি ও উপহাস করত। বাড়িতে ফিরে সে মন খারাপ করতো। পরে শিক্ষকদের সার্বিক সহযোগিতায় সে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পায়। সহপাঠীরাও তাকে মেনে নিয়ে বন্ধু সুলভ আচরন শুরু করে। ৫ম শ্রেণিতে সে এ গ্রেড পেয়ে উত্তির্ণ হয়। আমরা তাকে কিছুই করতে দেইনা সে পড়া লেখা নিয়েই সব সময় ব্যস্ত থাকে। তার জন্য সবাই আর্শিবাদ করবেন সে যেন তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। কলি জানায় সে একজন ডাক্তার হতে চায়। সে যেন ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে পারে। বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হক জানান, কলিরানী প্রতিবন্ধি হওয়ে কখনও ক্লাশ ফাকি দেয়নি,নিয়মিত ক্লাশ করেছে এবং সবার সাথে ভাল ব্যবহার করতো, ছাত্রী হিসেবে সে বেশ ভল। মোফাজ্জল হোসেন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব আইয়ুব আলী বলেন সে শারিরীক প্রতিবন্ধি হওয়ায় শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন কক্ষ পরিদর্শক পরীক্ষা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কক্ষে অবস্থান করেন। তাকে ৩০ মিনিট সময় বেশি দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মনোনীতা দাস বলেন বিশেষ চাহিদা সম্পর্ন্ন শিক্ষার্থী হিসেবে কলি রানীর পরীক্ষা শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মেনে গ্রহন করা হচ্ছে। তার পরীক্ষার প্রতিটি খাতা আলাদা করে বোর্ডে পাঠানো হচ্ছে।