সারাদেশ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে তান্ডব রংপুরে ২২ মামলায় আসামী ১০ হাজার গ্রেপ্তার-আড়াই শতাধিক

  হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর : ১ আগস্ট ২০২৪ , ৩:৪৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

Oplus_131072

কোটা সংস্কার ইস্যুকে কেন্দ্র করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারিদের ওপর ভর করে রংপুরে তান্ডবলীলা চালিয়েছে তৃতীয় পক্ষ । এঘটনায় রংপুরে সংঘর্ষ, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে রংপুর মেট্রোপলিন কোতয়ালী ও তাজহাটসহ বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা দায়ের হয়েছে। অধিকাংশ মামলায় পুলিশ বাদি হলেও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও বাদি রয়েছেন কয়েকটি মামলায়। এসব মামলায় ১ হাজার ৬শত জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার জনকে। এসব মামলায় ইতিমধ্যেই আড়াই শতাধিক আসামীকে গ্রেপ্তার করে রংপুর মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশ।
তবে এসব মামলায় কোন নিরপরাধ সাধারণ মানুষজন যেন হয়রানির শিকার না হয় সেবিষয়ে আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
এঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতংকে ঘর ছাড়া হয়েছে বিএনপি, জামায়াত, শিবির, জাতীয় পার্টিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। অতি প্রয়োজন ছাড়া পরিচিত নেতাকর্মীরা হাটবাজারেও বের হচ্ছেন না। জনসমাগম স্থলেও তাদের প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। গ্রেপ্তার এড়াতে তারা সবকিছুই এড়িয়ে চলছেন। তেমনি তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা এ নিয়ে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। এছাড়াও কোটা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাসহ অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীও গ্রেপ্তারের ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
পুুলিশ ও মামলা সূত্রে জানাগেছে, কোটা সংস্কার ইস্যূতে কেন্দ্র করে রংপুর জুড়ে তান্ডবলীলা চালায় বিএনপি-জামায়াত ও শিবিরসহ তাদের লোকজন। এতে রংপুর মেট্রোপলিটনের উপ কমিশনারের কার্যালয়, তাজহাট থানা, নবাবগঞ্জ ও ধাপ পুলিশ ফাঁড়ি, আদালত চত্বর, জেলা পুলিশ লাইন্স, বিভাগীয় ও জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস, জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, সমবায় ব্যাংক ও শপিং কমপ্লেক্স,সিটি কর্পোরেশন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগম, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ,নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটনায় দুর্বৃত্তরা। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এসব ঘটনায় রংপুর মেট্রোপলিটনের কোতয়ালী থানায় ১৮টি ও তাজহাট মেট্রোপলিটন থানায় ৪টি মামলা দায়ের হয়েছে।
এসব মামলায় রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব এ্যাড. মাহফুজ উন নবী ডন, জেলার আহবায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, জেলা যুবদলের সভাপতি নাজমুল আলম নাজু, জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শরীফ নেওয়াজ জোহা, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটির আহবায়ক আল ইমরান সুজন, সদস্য সচিব জাকারিয়া ইসলাম জিম, মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক ইমরান খান সুজন, সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম রবি, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জহির আলম নয়ন, সদস্য সচিব আতিকুল ইসলাম লেলিন, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলার সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক, রংপুর সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির সভাপতি মাসুদ নবী মুন্না, মহানগর যুবসংহতির আহবায়ক ইউসুফ আহমেদ, সাবেক সভাপতি শাহিন হোসেন জাকির, জেলা ছাত্রসমাজের আহবায়ক আরিফুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক আল আমিন সুমন, মহানগর ছাত্রসমাজের আহবায়ক আমিনুল ইসলাম, জামায়াতের জেলার সহকারি আমির আনোয়ারুল ইসলাম কাজল, মহানগরীর সচিব আব্দুর রউফসহ বিএনপি, জামায়াত, শিবির, জাতীয় পার্টি ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ৬শত জনের নাম উল্লেখ্য করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও প্রায় ১০ হাজারজনকে আসামী করা হয়েছে। এসব মামলায় বুধবার পর্যন্ত রংপুর মহানগরী ও জেলায় প্রায় আড়াই শতাধিক লোকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
এবিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো: মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চিহ্নিত অপরাধীদের ফুটেজ দেখে দেখে গ্রেফতার করা হচ্ছে। নিরপরাধ কাউকেই হয়রানি কিংবা গ্রেফতার করা হচ্ছে না।##