সারাদেশ

গাজীপুর-৩ আসনে নৌকার মাঝি হতে আলোচনায় যারা

  এস এম রাফি ৯ অক্টোবর ২০২৩ , ১১:২৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

গাজীপুর-৩ আসনে মনোনয়ন কে পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে এখন সরোব আলোচনা।কমপক্ষে এই আসন ঘিরে আ,লীগ এখন ৪ খন্ডে বিভক্ত।

প্রতিহিংসা না থাকলেও কমপক্ষে ৩ জন প্রার্থির সমর্থকরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থি এবার মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে নিশ্চয়তা দিয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন।

তবে প্রতিদ্বন্দ্বিকে দমনে পর্দার আড়াল থেকে ত্রাস ছড়াচ্ছে রাতের আঁধারে একটি কুচক্রী মহল।ভীতি প্রদর্শণ করে আখের গোছাতে ব্যস্ত এই চক্রটি।

এমনকি দিনের বেলাতেও অপরিচিত কিছু মুখ একজন প্রার্থির বাড়ির আশপাশে ঘুরঘুর করছে, যা এলাকাবাসির নজরে এসেছে।এ নিয়ে তারা শঙ্কিত।হয়েছে প্রশাসনের দ্বারস্থ।

গাজীপুর-৩ আসনটি জেলার ৫ টি আসনের মধ্যে জনগুরুত্বপূর্ণ,ঠিক যেন সোনার হরিণ।এই আসনটি সোনার হরিণ বা আলাদ্দিনের চেরাগ হওয়ার অন্যতম কারন হলো,এই আসনে রয়েছে ৭’শ টির মত ছোট বড় ফ্যাক্টরী।

এই আসন থেকে একবার এমপি হতে পারলেই চৌদ্দ পূরুষকে আর পিছনে তাকাতে হয় না।যে কারনে এই আসনটি নিজের করে পেতে মরিয়া এখানকার নেতারা।

এই আসন থেকে যারা প্রচারে রয়েছেন তারা হলেনঃ

ইকবাল হোসেন সবুজঃ

আসন্ন সংসদ নির্বাচন ঘিরে গাজীপুর-৩ আসনে দ্বিতীয়বারের মত মনোনয়ন চাইবেন জেলা আ,লীগের সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ।

তিনি প্রতিদিনই এলাকাটি চষে বেড়াচ্ছেন এবং সরকারি স্কুল কলেজের নতুন ভবণ উদ্বোধনের মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।

মনোনয়নের জন্য এক সময়ের উঠান বৈঠকের জনক ইকবাল হোসেন সবুজ শক্ত প্রার্থি হলেও এবার এখন পর্যন্ত উত্তাল বাঁধভাঙ্গা জনতার কাফেলার ছন্দ পতন রয়েছে তার প্রচারনার মধ্যে।

তবে একথা সত্য যে সকল নীরিখে তিনি এখনো জনপ্রিয় প্রার্থি।আসনটি নিজের করে ধরে রাখতে এবারও তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন।মনোনয়নের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী বলে জানা গেছে।

এ্যাড: জামিল হাসান দুর্জয়ঃ

সাবেক মন্ত্রী,আ,লীগের নীতি নির্ধারক, এই আসন থেকে ১৯৯১-২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা শ্রীপুরের সিংহ পূরুষ প্রয়াত এমপি এ্যাড: রহমত আলীর পুত্র তিনি।এছাড়া জেলা আ,লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদকও তিনি।

ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত।নামাজী পরহেজগার এবং অনলবর্ষী বক্তা তিনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে মনোনয়ন চেয়ে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছিলেন তিনি।দীর্ঘ সময় এখানকার রাজনীতি থেকে নিজেকে অন্তরীন রেখেছিলেন তিনি।

তবে মাঝে মধ্যে জাতিয় কর্মসূচিতে নিজ বাসভবণে আলাদা কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে তাকে।এবারের মনোনয়নে সরোব প্রচারে রয়েছেন তিনি।

তার নেতা কর্মি অনুসারীরা মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে এবার বেশ উজ্জীবিত এবং প্রায় শতভাগ আশাবাদী ও আত্মপ্রত্যয়ী বলে জানা গেছে।

অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি এমপিঃ

এ্যাড রহমত আলী পরিবারের সদস্য ও তার কন্যা অধ্যাপিকা রুমানা আলী টুসি সংরক্ষিত আসনের এমপি।

শ্রীপুরের শান্তি কন্যা নামে পরিচয় দেওয়া রুমানা আলী টুসির অবস্থান বর্তমান এমপির পরেই বলে আলোচনা রয়েছে।

এই আসনের অধিকাংশ মানুষ মনে করছে,কোন কারনে যদি বর্তমান এমপি মনোনয়ন বঞ্চিত হন তবে সেক্ষেত্রে রুমানা আলী টুসির মনোনয়ন প্রাপ্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

তবে একই আসন থেকে ভাই বোনের মনোনয়ন চাওয়া ভাল চোখে দেখছে না সাধারন মানুষ।তারা মনে করছেন এই ঘটনা ভাই বোনের পারিবারিক দ্বন্দ্বেরই বহিঃপ্রকাশ।

আব্দুল জলিল বিএঃ

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বিএ এবার আ,লীগের মনোনয়ন চাইবেন বলে গুঞ্জণ রয়েছে।তবে এলাকায় তার দৃশ্যমান কোন প্রচার প্রচারনা নেই।

তবে তার অনুসারিরা বলছেন,যেহেতু গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা পাওয়ার পর তাকে পরিকল্পিতভাবে পরাজিত করা হয়েছে,সেকারনে তার সম্ভাবণা রয়েছে জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার।

এ.কে.এম সাখাওয়াত হোসেন খানঃ

শ্রীপুর আ,লীগ প্রতিষ্ঠার অন্যতম পথিকৃত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন মরহুম মিজানুর রহমান খানের উত্তরসূরী তিনি।ক্লীন ইমেজের এ রাজনৈতিকে চরিত্রে কোন বদনাম ও কালিমা নেই, যে বদনাম কমবেশি অন্য নেতাদের মধ্যে বিদ্যমান।

প্রচারনায় বেশ সাড়া জাগানিয়া প্রার্থি তিনি।রাজনীতির মাঠে তার পিতার স্বর্ণালী পরিচয়,তার নির্লোভ ক্লীন ইমেজ তাকে এবার অনন্য মাত্রা এনে দিয়ে়ছে।

এই মূহুর্তে তাকে নিয়ে বড়সড় আলোচনা না থাকলেও বরেণ্য পরিবারের সন্তানটিকে ঘিরে মানুষের মধ্যে রয়েছে আশা জাগানিয়া কৌতুহল।বিশেষ করে তার ক্লীন ইমেজের বিষয়টি জনমনে বেশ আলোচিত ও আস্থার সংকট তৈরি করেনি।

অনেকেই ধারনা করছেন, যেহেতু প্রধানমন্ত্রী ১৯৮৪ সালে অতিথি হয়ে এই পরিবারে এসেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী মরহুম মিজানুর রহমান খানের সাথে এই জনপদে অনেক রাজনৈতিক কর্মকান্ড পালন করেছেন এবং ক্লীন ইমেজের জনপ্রত্যাশিত প্রার্থি এবার মনোনয় দেবেন,সে কারনে বিতর্কহীন সাখাওয়াত হোসেন খানকে এবার গাজীপুর-৩ আসনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বেছে নিলে বিস্ময়ের কিছু থাকবে না।

গাজীপুর-৩ আসনের ৭ লাখ জনতা মুখিয়ে আছে এই আসনের আগামী-দিনের নৌকার মাঝি কে হচ্ছেন তা জানার জন্য।এবার কে পাচ্ছেন মনোনয়নের সেই কাঙ্খিত সবুজ সংকেত, তা জানতে উদগ্রীব এই জনপদের ভোটাররা।

তারা আশা করছেন চলতি মাসের মধ্যেই কেন্দ্র থেকে দেওয়া সবুজ সংকেত কে পেলেন তা জানতে পারবেন তারা।

একই সাথে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেখ হাসিনা মনোনীত নৌকার কান্ডারী এই জনপদে আসবেন নতুন স্বপ্ন নিয়ে।