শিক্ষা

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশনে জাবির কর্মচারীরা

  uadmin ৩০ জুলাই ২০২৩ , ১১:০৬ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে টানা ১৩ দিন অবস্থান ধর্মঘট পালন শেষে আমরণ অনশনে বসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন আশ্বাস না পাওয়ায় রবিবার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশনে বসেন তারা।

কর্মচারীদের দাবি, চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনবার প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। একই দাবিতে কয়েকবার মানববন্ধন করেছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি আমরণ অনশনে বসলে প্রশাসন ৬ মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসসমূহে তাদের নিয়োগের মৌখিক আশ্বাস দেন।

তবে আশ্বাসের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও প্রশাসন নিয়োগের ব্যাপারে কোন আগ্রহ দেখায়নি। বিভিন্ন পদে অন্যদের নিয়োগ দিলেও অস্থায়ী এসব কর্মচারীদেরকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, হল ও অন্যান্য অফিসে বর্তমানে ১৪২ জন কর্মচারী দৈনিক মজুরিভিত্তিতে কর্মরত রয়েছেন। পূর্বে প্রতিদিনের কাজের বিনিময়ে এ সকল কর্মচারীরা ৩৩০ টাকা বেতন পেতেন। পরবর্তীতে গত বছরের শেষ দিকে কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ৭০ টাকা বাড়িয়ে প্রশাসন ৪০০ টাকা বেতন নির্ধারণ করেন। এছাড়াও ঈদ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে স্থায়ী কর্মচারীরা পূর্ণ বোনাস পেলেও অস্থায়ী কর্মচারীরা দৈনিক বেতনের বাইরে কোন বোনাস বা ইনক্রিমেন্ট পান না।

জাহানারা ইমাম হলের অফিস সহায়ক নাসরিন আক্তার বলেন, ১৩ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার পরও চাকরি স্থায়ীকরণে প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ আমর দেখিনি। এরমধ্যে গত ১৮ জুলাই উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির স্যার আমাদের সাথে কথা বলতে আসেন। সেসময় শরীফ স্যার ২৭ জুলাই ইউজিসির সাথে মিটিং করে আমাদের একটা ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। কিন্তু মিটিং থেকে ফিরে রেজিস্ট্রার জানান, ইউজিসি নতুন কোন পদ দেয়নি। আমরা যেন আমাদের স্ব স্ব কর্মস্থলে ফিরে যাই। চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়ে কোনো লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।

ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের অফিস সহকারী মো. সোহেল মিয়া বলেন, এর আগেও আমরা অনেক আশ্বাস পেয়েছি, কিন্তু কোন ফল পাইনি। চাকরি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু হলেও আমরা এখান থেকে উঠবো না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারকে একাধিকবার ফোন করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। অফিসে গেলে তাদের একান্ত সচিব জানান, তারা মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন।

এর আগে চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, দৈনিক হাজিরার কর্মচারীদের যোগ্যতার ঘাটতি আছে। অনেকেই চাকরির প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারেনি। নতুন হলে ইলেকট্রিশিয়ান ও প্লাম্বারসহ কয়েকটি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেসব পদে আবেদনের যোগ্যতা না থাকায় বর্তমান কর্মচারীরা আবেদনই করেননি। বাবুর্চি পদে কেউই আবেদন করেনি। তারা এখানে বেশিরভাগই অফিস পিয়ন, মালী, সুইপার, গার্ড ও ক্লিনার। এসব পদে খালি না থাকায় আমরা তাদের নিয়োগ দিতে পারছি না।