এস এম রাফি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১২:৩৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। সব মিলিয়ে জেলার চিলমারী উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার গ্রাহক পড়েছেন ভোগান্তিতে। বিদ্যুৎতের এ অবস্থা বিভিন্ন পেশাজীবিসহ বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ঘন ঘন এমন লোডশেডিংয়ের কারণে পড়ালেখারও ব্যাঘাত ঘটছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছেন, চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রভাব পড়েছে কৃষি খাতে। সম্প্রতি আমন মৌসুমে সেচের মাধ্যমে আবাদ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিকভাবে না থাকায় কৃষি জমিতে সময় মতো পানি দিতে পারছেন না অনেকেই। এতে বড় ধরনের ক্ষতির প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন কৃষকরা।
উপজেলার পাত্রখাতার কৃষক মাজেদুল ইসলাম বলেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া এ মৌসুমে ৪ থেকে ৫বিঘা জমি সেচের মাধ্যমে পানি দিতে হচ্ছে। এখন ঠিকভাবে বিদ্যুৎ না থাকায় সময় মত পানি দিতে পারছি না।
কৃষি বিভাগ বলছে, সঠিক সময়ে জমিতে পানি না দিলে প্রায় ৮ হাজার ১শ একর আমন আবাদ হুমকির মধ্যে পড়বে।
সন্ধ্যা হলেই দেখা যায় বিদ্যুৎ থাকে না এতে শিক্ষার্থীরা তাদের লেখাপড়া ঠিকভাবে করতে পারছে না। বেশকিছু পরিবারে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা (আইপিএস) থাকলেও বেশিভাগই বাড়িতে সেটি নেই।
এদিকে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বিভিন্ন ওয়ার্কসপে কাজে ব্যাঘাত ঘটেছে। সময়মত কাজ শেষ করতে পারেন না ব্যবসায়ীরা। কলেজ মোড় এলাকার ব্যবসায়ী রাকু বলেন, অনেক গুলো অর্ডার নেয়া আছে কিন্তু বিদ্যুৎতে লোডশেডিংয়ের কারণের সময় মত কাজ বুঝে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
অপর দিকে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. আবু রায়হান জানান, তীব্র দাবদাহের কারণে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে রোগীদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকলেও পর্যাপ্ত তেলের বরাদ্দ না থাকায় তা ব্যবহার করতে পারছি না এতে করে রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
বিদ্যুৎ অফিস জানান, চিলমারীতে বিদ্যুৎ সেবা গ্রহীতা প্রায় ৫০ হাজার। এর মধ্যে আবাসিক ৪৫ হাজার ২৪৩ জন গ্রাহক, বানিজ্যিক ৩হাজার ৭ গ্রাহক আর সেচ আছে ১ হাজার ৫৭ টি। চিলমারী সাব স্টেশনে বিদ্যুৎ ফিটার আছে ৬ টি। এখানে ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন তবে উপজেলার জন্য প্রতিনিয়ত ৪ অথবা ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দ দেওয়া হয় যা প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
চিলমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল বলেন, চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ আমরা পাচ্ছি। গতকাল রাত ১০ টার দিকে চাহিদা ছিলো ৮ থেকে ৯ মেগাওয়াট কিন্তু আমরা বরাদ্দ পেয়েছি ৩ মেগাওয়াট, ওই দিন সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছি যা দিয়ে ৬ টি ফিটার চালানো সম্ভব নয় বলে দুইটি ফিটার বন্ধ রাখা হয়েছিলো।
তিনি বলেন, সন্ধ্যার সময় বিদ্যুৎতের চাহিদা বেশি হয়। এতে ওই সময়ে লোড বেশি পরে। এসময় আমরা চাহিদা মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারি না। আবার সকালে দেখা যায় চাপ একদম কমে যায়। তবে স্বাভাবিক সময়ে ৭ থেকে সাড়ে সাত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ হলেই এ উপজেলায় চাহিদা মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।