এস এম রাফি ১১ অক্টোবর ২০২৩ , ৭:৩৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কিছু উদ্যোগ এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আর এর মধ্যে অন্যতম হলো আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি সংলাপের আহ্বান জানাতে পারেন সকল বিরোধী দলগুলোকে। বিএনপি সেই সংলাপের আহ্বানে আসুক না আসুক অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যেন সংলাপে আসে সেটি নিশ্চিত করা হবে।
বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছেন, প্রধানমন্ত্রী চলতি মাসের শেষ দিকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে পারেন। এই ভাষণে তিনি গণতন্ত্র সুরক্ষা এবং সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাবেন এবং নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য কারও যদি কোনো পরামর্শ থাকে তা গ্রহণ করা হবে বলেও জানাবেন।
একই সাথে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন নিয়ে আলাপ আলোচনার জন্য আহ্বান জানাতে পারেন বলে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা বলেছেন, চলতি মাসের শেষ দিকে জাতীয় সংসদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এই অধিবেশনেও প্রধানমন্ত্রী এরকম আহ্বান জানাতে পারেন।
তবে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ কিংবা সংসদে বক্তৃতা যেখানেই দিন না কেন প্রধানমন্ত্রী সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে একটি সংলাপের প্রস্তাব করবেন। আর এই যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করতে চায় তাদেরকে ডাকা হবে।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ ধরেই নিয়েছে যে বিএনপি সংলাপে অংশগ্রহণ করবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার একটি পরিকল্পনা নিয়েই বিএনপি এগোচ্ছে।
আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য হলো অন্য সকল রাজনৈতিক দল যারা নির্বাচনে আগ্রহী তাদেরকে উৎসাহিত করা এবং উদ্বুদ্ধ করে নির্বাচনে নিয়ে আসা যেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে হয়।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, অন্তত ৫০ টি রাজনৈতিক দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগ্রহী। এই রাজনৈতিক দলগুলো যেন স্বস্তি পায় এবং নিশ্চিত হতে পারে, বিএনপি দ্বারা যেন বিভ্রান্ত না হয় সেই জন্যই প্রধানমন্ত্রী সংলাপের আহ্বান জানাবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ এবং ২০১৮’র নির্বাচনের আগেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে চায়ের নিমন্ত্রণ দিয়েছিলেন গণভবনে।
কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া সেই নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন। অন্যদিকে ২০১৮ সালে গণভবনে সকল রাজনৈতিক দলের তত্ত্বাবধানেই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সংলাপের মাধ্যমেই সকল রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল।
এবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে একটি সংলাপের ডাক দেবেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিশেষ করে সরকার যে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে আগ্রহী এই বার্তাটি তিনি দিতে চান।
আর এই বার্তা দেওয়ার জন্যই তিনি আনুষ্ঠানিক সংলাপের ডাক দিতে পারেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগের কেউ কেউ বলছেন, সংলাপে যদি বিএনপি না আসে তাহলে সেটি অন্য অর্থ হতে পারে। এই কারণেই প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপের প্রস্তাব দিবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে।
তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক মহলের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য এবং সরকারের আন্তরিকতা প্রমাণের জন্য এ ধরনের সংলাপ আহ্বানের কোনো বিকল্প নেই।
এ ধরনের একটি আহ্বান প্রধানমন্ত্রী জানাবেন। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এই সংলাপের মধ্যে দিয়েই আগ্রহী সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের মাঠে নামানো হবে।