এস এম রাফি ৫ জুলাই ২০২৩ , ৫:১৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
সদরুল আইনঃ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনশ’ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ।
এই মনোনয়নকে সামনে রেখে নির্বাচনের মাঠে প্রচারাভিযান শুরু করেছে সবুজ সঙ্কেত পাওয়া প্রার্থীরা।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আগামী কয়েক মাস আওয়ামী লীগ সারাদেশে একটি নির্বাচনী আবহ তৈরী করতে চায়। এজন্যই যে সমস্ত প্রার্থীদের ইতিমধ্যে চূড়ান্তভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে- তাদেরকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে।
তারা এবার কোরবানির ঈদ থেকেই মাঠে নেমেছে এবং জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ১৪০ আসনে আওয়ামী লীগ, গত নির্বাচনে যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে, তাদেরকেই বহাল রেখেছে।
এই ১৪০ জন ইতিমধ্যেই জেনেছেন, তারা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাচ্ছেন। আর ১২০ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পরিবর্তন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাকি ৬০টি আসনে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। এটি নির্বাচনের প্রকৃতির উপর নির্ভর করছে। যদি শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করে, তাহলে এই আসনগুলোর মধ্যে থেকে বেশ কিছু আসন শরীকদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
আর যদি এককভাবে নির্বাচন করে, তাহলে এই আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দিবে। একাধিক প্রার্থীকে এইসব আসনে সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে রাখা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ গত এক বছরে তিনটি মাঠ পর্যায়ের জরিপ পরিচালনা করেছে। এই সমস্ত জরিপের ভিত্তিতেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ১৪০টি আসনে আওয়ামী লীগ তাদের প্রার্থীদেরকে পুনরায় নৌকা প্রতীক বরাদ্দ করবে। সেই আসনগুলোতে প্রার্থীরা জনপ্রিয় এবং যে কোনো পরিস্থিতিতেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
এই ১৪০টি আসনের অধিকাংশতেই হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে এবং ফরিদপুর,মাদারিপুর, গোপালগঞ্জ,গাজীপুরসহ আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিচিত আসনগুলোর প্রার্থীর সংখ্যাই বেশি।
তবে আওয়ামী লীগের অন্যতম ভোট ব্যাংক ফরিদপুরে একাধিক প্রার্থীর পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক আসনে প্রার্থীতা পরিবর্তন হতে পারে, যারা বয়স্ক এবং নানা কারণে আগামী নির্বাচন করতে পারবে না, তাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থী ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
যারা এবারই প্রথম নির্বাচন করবে, এরকম অর্ধেকের বেশি প্রার্থীকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ব্যক্তিগতভাবে তাদেরকে ডেকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন।
যেমন ফরিদপুরের একটি আসনে নিউরো চিকিৎসক ডা. অধ্যাপক কাজী দীন মোহাম্মদ মনোনয়ন পাবেন বলে মোটামুটি নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এ রকম বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রার্থীদেরকে, যাদেরকে মনোনয়ন দিবেন বলে নির্ধারণ করেছেন, তাদেরকে ডেকেছেন এবং নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
যারা গতবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হবার পর ঠিকঠাক মতো কাজ করতে পরেননি, বদনাম কুড়িয়েছেন, নানা রকম বিতর্কে নিজেদেরকে জড়িয়েছেন এবং দলের স্বার্থবিরোধী কর্মকান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তারা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না। এ রকম ১২০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই সমস্ত ব্যক্তিদের বদলে আওয়ামী লীগ অপেক্ষাকৃত জনপ্রিয় প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর কিছু আসনে আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছে।
এ রকম ৬০টি আসনের মধ্যে অধিকাংশই শরীকদের জন্য নির্ধারিত, তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের গতি-প্রকৃতির উপর নির্ভর করবে, আওয়ামী লীগ এই আসনগুলো শরীকদের দিবে, না নিজেদের প্রার্থী নিয়োগ করবে।