মো. তাজমুল ইসলাম, তালা(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ , ৬:২৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের বিলাঞ্চল এখনও জলাবদ্ধ থাকায় এবছর বিলে বোরো ধান আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মৌসম শুরু হয়ে গেলেও বীজতলা ও ধানের জমি এখনও পানিতে তলিয়ে থাকায় হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়েছে বোরো চাষীরা।
তবে উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাযায় এবারে উপজেলায় বোরো ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ১শ ৫৫ হেক্টর জমি। যার মধ্যে ঝুকিপূর্ণ রয়েছে ১শ ৭০ হেক্টর জমি। এর মধ্েয অনিশ্চিত রয়েছে ৬০ থেকে ৭০ হেক্টর বোরো আবাদ যোগ্য জমি। আর এসকল অনিশ্চয়তার কারন জলাবদ্ধতা। তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলছেন সরকারি উদ্েযাগে হলেও পানি সেচ দিয়ে এই জমিগুলো বোরো আবাদের আওতায় আনা হবে তবে এবিষয়ে একটু বিলম্ব হতে পারে।
সরেজমিন উপজেলার লাউতাড়া, জাতপুর, আলাদীপুর ও পাঁচরোখী, শুভাষিনী, শিরাশুনি বিলে ঘুরে দেখাযায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে শতাধিক হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষুদ্র, মাঝারী ও মধ্যবিত্ত কৃষক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে চলেছে।
তালার কপোতাক্ষ নদ ও ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা নদীর সাথে এসকল বিলের সংযোগ খাল দীর্ঘদিন খনন না হওয়ার কারণে এ জলাবন্ধতার মূল কারণ। এছাড়াও এলাকার জমির মালিক ও গ্রামবাসি খালগুলো অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে অতি বৃষ্টির ফলে বিলের জমা পানি আর নদীতে পড়তে পারছে না। যার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এই সকল বিলের ফসলের উপর নিভ্রর করে চলে এঅঞ্চলের মানুষের জীবন জীবীকা। যদি ইরি বোরো চাষ না করতে পারে তাহলে তাদের জীবন জীবীকা হয়ে পড়বে দূর্বীসহ। এসময় এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের নিকট জলাবদ্ধতা নিরসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে বোরো ধান চাষের সুযোগ করে দেয়ার জোর দাবি জানান।
এসকল এলাকার চাষীরা জানান, সরকারী কালভার্টের মুখ বেঁধে দেয়ার কারণে এসকল বিলের পানি নামার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এই বিলে কারো কারো ৮ থেকে ১০ বিঘা জমি আছে। এই বিলে যে ধান হয় সেই ধানে তাদের সারা বছরের খাবার হয়ে যায়। যদি পানি সরানোর ব্যবস্থা করা না যায় তাহলে এসকল বিলের প্রায় শতাধিক হেক্টর জমিতে ধান চাষ হবে না। আর যদি তারা ধান চাষ করতে না পারে তাহলে সংসার চালাতে খুবই হিমশিম খেতে হবে এসব চাষীদের।
তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, আমার ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বিল জলাবদ্ধ। এখন ধান রোপনের মৌসুম। যে ভাবে পারছে নিজে বাঁচার জন্য বেঁধে নিচ্ছে। তবে পানি সরানোর ব্যবস্থা করা না গেলে এসকল বিলে এবার ধান চাষ সম্ভব হয়ে যাবে। ইউপি আমিনুর ইসলাম জানান, পানি নিষ্কাশনের খাল গুলো উন্মুক্ত জরুরি।
উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, এবছর তালা উপজেলায় ১৯ হাজার ১ শত ৫৫ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে ১ শত ৭০ হেক্টর জমির মধ্যে ৫০ থেকে ৭০ হেক্টর জমি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে জলাবদ্ধতা নিরষনের জন্য বিএডিসির সেচ প্রকল্প চালু করার চেষ্টা চলছে। এটা ফলপ্রসু হলে হয়তো লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল জানান, এলাকায় বোরো ধান চাষ সহজতর করতে পানি সরানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেচের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তেঁতুলিয়া ইউনিয়নে ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিএডিসির সাথে কথা চলছে তাদের মাধ্যমে পাওয়ার পাম্প লাগিয়ে ডুমুরিয়া উপজেলার চুকগনর ও নরনিয়া খাল দিয়ে পানি সেচের ব্যবস্থা করতে পারলে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে বলে মনে করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।