সারাদেশ

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি ব্রীজ, ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোয় ১০ হাজার মানুষের পারাপার

  উত্তম কুমার মোহন্ত,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) ২৮ নভেম্বর ২০২৪ , ৩:০৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরে চন্দ্র খানা মৌজার বালাটারী এলাকায় নীল কোমল নদীর ওপারে প্রায় আঠারো বছর আগে সরকার গরীব অসহায় ও ভূমিহীন মানুষের বসবাসের আবাসস্থল আবাসন নির্মাণ করে দিলেও আবাসনের মানুষের চলাফেরার একমাত্র রাস্তা জন্য নীল কোমল নদীর উপরে আজ অবধি নির্মাণ হয়নি একটি ব্রীজ। বাঁশের সাঁকো দিয়ে আবাসন সহ তিন গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের চলাচলের ভোগান্তি।

ফুলবাড়ী সদরের এই আবাসন টিতে বসবাস রত ১৮০ টি পরিবার সহ আশেপাশের তিন গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমের আগে আগেই ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষুদ্র মেরামতের স্বপ্ন বাজেটের একটি অংশ চেয়ারম্যান মেম্বার সহ স্থানীয় ব্যাক্তি বর্গের আত্মীক সহযোগিতায় আবাসনগামী এক মাত্র রাস্তা নীল কোমল নদীর উপরে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের বাঁশ ও কাঠের তৈরি সাঁকো দিয়ে কোনমতে দীর্ঘদিন থেকে চলাফেরা করে আসছেন। গেল বর্ষা মৌসুমে ঘন বৃষ্টি ও উজানের পানির ঢলে সাঁকোটির বাঁশ ও কাঠের খুঁটি গুলো নড়বড়ে হয়ে যাওয়া সহ -উপরের বিছানী গুলো নষ্ট হয়ে কিছু কিছু অংশ ভেঙে যায়। চলাফেরার আর কোন রাস্তা না থাকায় এই ভাঙ্গা সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় আবাসন সহ আশপাশ গ্রামের শত শত মানুষ। প্রায় সময় ঘটছে দুর্ঘটনা বিশেষ করে নারী,শিশু, বৃদ্ধের জীবনের ঝুঁকি আরো ও বেশি।

বর্তমানে সাঁকো টি সংযোগ সড়ক থেকে দুই দিকে বিছিন্ন হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের উদ্যোগে পাশেই বাঁশের খুঁটি দিয়ে উপরে বাঁশ বেঁধে নির্মিত করেন বাঁশের টারের সাঁকো।এই সাঁকো দৈনন্দিন জীবন ও জীবিকার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে আবাসন সহ আশপাশের মানুষ জন। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে পারাপারে দূর্ঘটনায় শিকার ও হচ্ছেন অনেকেই। এছাড়া বর্তমানে ধান কাটা মারার ভরা মৌসুমে ফসল আনা নেওয়ার চরম ভোগান্তিতে ভুগছেন ওই এলাকার কৃষকরা। সবে মিলে এই অঞ্চলের মানুষজনের যাতায়াতের এই একটি মাত্র রাস্তা হত্তয়ায় এলকাবাসী সহ আবাসনে বসবাসরত মানুষের সরকারের কাছে প্রাণের দাবি নদীর উপরে কাঠ বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে একটি পাকা ব্রীজ নির্মাণ করে আমাদের দীর্ঘদিনের দুঃখ দুর্দশা লাঘব করা হোক।

আবাসনের বাসিন্দা আছিমন বেগম,আজাহার আলী, ইয়াকুব,আব্দুল জলিল ও হযরত আলী জানান,দীর্ঘদিন ধরে আমরা আবাসনে বসবাস করে আসছি চলাচলের একমাত্র রাস্তাটিতে আজ পর্যন্ত পাকা ব্রীজ নির্মাণ হলো না। সারাজীবন বাঁশ, কাঠের তৈরি সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়ে যাতায়াত করতেছি সেও সাঁকো আজ নদীতে ভাঙ্গি পরি আছে সকলের সহযোগিতায় পাশে বাঁশের খুঁটি দিয়ে টার বাঁধিয়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাচ্চা,কাচ্চা নিয়া কোনমতে যাতায়াত করছি। প্রায় মানুষজন সবসময় দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।তাই সরকারের কাছে আকুল আবেদন এই নদীর উপর একটি পাকা ব্রীজ নির্মাণ করে দেওয়া হোক।

স্থানীয় শিক্ষক আব্দুল আলীম ও ছাত্র শ্রাবণ জানান, ঝুঁকি পূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে অনেক কষ্টে পারাপার হতে হয়, অনেক সময় আমরা দূর্ঘটনার শিকার হই।তাই এখানে দ্রুত একটি ব্রীজ নির্মাণ করে দেওয়া অনুরোধ জানাচ্ছি।

আবাসনের পাশের গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম ব্যাপারী ও মমিনুল ইসলাম জানান, আমরা এই সাঁকো দিয়ে পারাপার হয়ে গিয়ে ও পার্শ্বে আবাদ কিস্তি করি বর্তমানে কাঠের সাঁকো টি ভেঙে যাওয়ায় আবাদ দেখাশোনা করতে যাওয়া খুব অসুবিধা হয়েছে। এখানে একটি পাকা ব্রীজ নির্মাণ হলে আমাদের সকলের জন্য খুব ভালো হতো তাই সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি অল্প সময়ের মধ্যে এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হোক।

এব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী প্রকৌশলী মামুনুর রহমান জানান,কুড়িগ্রাম জেলা উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে আবাসনের এই ব্রীজটির প্রপোজাল পাঠানো হয়েছে,অনুমোদন পেলেই ব্রীজের কাজ করা সম্ভব হবে।