রুয়েট প্রতিনিধি ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৯:১১ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
সম্প্রতি ঢাকা-রাজশাহী রুটের একটি বাসে সংঘটিত ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনা, পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন। তাঁরা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ধর্ষিতাদের ন্যায়বিচারের দাবিতে সরব হন।
আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় রুয়েটের মূল ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা প্লাকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন—
“আমাদের প্রধান দাবি, ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতে হবে, যেন ভবিষ্যতে কেউ এই ঘৃণ্য অপরাধের সাহস না পায়। পাশাপাশি, প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
এ সময় শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন—
“ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই!”
“আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই নাই!”
মানববন্ধনে মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাকওয়া তাহমিদ ধর্ষণ প্রতিরোধে বেশ কয়েকটি দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—
আইন ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কার: ধর্ষণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
সাক্ষ্য আইন সংশোধন: ভিকটিমের পরিচয় গোপন রাখা এবং সাক্ষ্য প্রদানে মানসিক সহায়তা দিতে আইন সংস্কার করা দরকার।
ফরেনসিক সুবিধার উন্নতি: আধুনিক ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন ও দক্ষ জনবল নিয়োগ করতে হবে।
সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা ও নারী অধিকার নিয়ে প্রচার চালাতে হবে।
ভিকটিম সুরক্ষা ও পুনর্বাসন: ধর্ষণের শিকারদের আইনি সহায়তা, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধি: পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরও কার্যকর করা দরকার।
ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: ধর্ষণের শিকার ব্যক্তির ছবি বা ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে হবে।
রুয়েটের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁরা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিবাদ চলবে এবং তরুণ সমাজকে এ আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাঁরা বলেন, প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুততম সময়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।