দূর্জয় রায়: ৫ জুন ২০২৫ , ৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বরাদ্দ পাওয়া ভিজিএফের (ভালনেরাবল গ্রুপ ফিডিং) সাড়ে সাত টন টন সরকারি চাল অবৈধভাবে মজুত রাখার অভিযোগে অভিযান চালিয়ে তা জব্দ করেছে সেনাবাহিনী। অভিযানে ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্লিপ বাণিজ্য এবং দরিদ্রদের অধিকার হরণ করার অভিযোগ উঠে এসেছে।
বুধবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর একটি দল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় সন্তোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের পাশের একাধিক গুদামে অভিযান চালিয়ে এসব চাল জব্দ করে।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্র জানায়, ঈদ উপলক্ষে ইউনিয়নের আট হাজার দরিদ্র পরিবারের জন্য বরাদ্দ ছিল ৮০ মেট্রিক টন চাল। প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার কথা থাকলেও অনেক সুবিধাভোগী চাল না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সুবিধাভোগী তালিকাভুক্ত বিধবা নারী সালেহা বেওয়া (৬০) বলেন, “সকাল থেকে পরিষদে ঘুরেছি, বলে চাল শেষ। পরে শুনি, ব্যবসায়ীরা চাল তুলে গুদামে রেখেছে! এই চাল তো আমাদের জন্য ছিল।”
আরেক সুবিধাভোগী শ্রমিক আবিুল হোসেন (৬৫) বলেন, “ঈদের আগে এই চালটা খুব দরকার ছিল। এখন শুনছি যারা চাল পায়নি, তাদের চাল গুদামে মজুত ছিল। এটা খুব অন্যায়।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউপি সদস্য ও পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভিজিএফ স্লিপগুলো আগেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। ব্যবসায়ীরা সেই স্লিপ দিয়ে চাল উত্তোলন করে বাজারের গুদামে মজুত করেন।
“চাল বিতরণের আগেই গোপনে স্লিপ বেচাকেনা হয়েছে। আমরা ছবি ও তথ্যসহ সেনাবাহিনীকে জানাই। পরে তারা এসে অভিযান চালায়,’ জানান স্থানীয় বাসিন্দা নূর ইসলাম। ‘অভিযানের সময় অভিযুক্ত ইউপি সদস্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান,’ তিনি বলেন।
অভিযোগের বিষয়ে সন্তোষপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য খাদিজা বেগম বলেন, “পরিষদের বাইরে কেউ স্লিপ বিক্রি করেছে কিনা, তা আমি জানি না। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ। যে সতল সদস্য জড়িত তারা সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর জব্দকৃত চাল প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে। “ঘটনার তদন্ত চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আমরা প্রস্তুত। মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”