ইউসুফ হোসেন, রাবি ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৩:৪৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
আজ ১৪-ই ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা বাঙালী জাতিকে মেধাশূন্য করতে এই দিনে দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্বিকারে হত্যা করে। বিজয়ের ঠিক আগ মূহুর্তে এমন হত্যাকান্ড পুরো বাঙালী জাতিকে শোকাহত করে তুলেছিল। জাতি হয়ে পড়েছিল নির্বিকার। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত একটি স্থান হল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ। তবে সেই স্মৃতিবিজড়িত স্থান বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গণে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও চলছে ‘হিন্দি গান’ বাজিয়ে বনভোজন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গণের দক্ষিণ ধারে বসে বনভোজনের রান্নার জন্য তরি-তরকারি কাটাকাটি করছে। তারই পশ্চিম ধারে কাপড়ের সামিয়ানা চতুর্দিকে ঘিরে ভেতরে সাউন্ড বক্সে বাজানো হচ্ছে ‘হিন্দি গান’। এসময় কথা বলে জানা যায়, তারা ফলিত গণিত বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সেখানে বনভোজনের জন্য তারা বিভাগের সভাপতি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কোনো অনুমতি নেয়নি বলে জানান।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বধ্যভূমির মতো একটি জায়গায় এমন বনভোজন নিয়ে মর্মাহত শহীদ বুদ্ধিজীবী মীর আব্দুল কাইয়ুমের মেয়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া। তিনি বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে এসব বিষয়ে আমি খুবই মর্মাহত এবং লজ্জিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশসন যদি চায়, তাহলে এটি নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব। খুব কম মুল্যে আমরা স্বাধীনতা পাইনি। আমার বাবাসহ যারা মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছে তাদের প্রতি অমর্যাদা করছে এই নতুন প্রজন্ম। ওখানে যারা শায়িত আছে তারা নিজেদের জীবনের মুল্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। সেখানে গান-বাজনা পিকনিক হতে পারে না।
সরষের মধ্যে ভূত আছে জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, আমি বিশ্বাস করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে এমন কেউ আছে, যারা এই গনহত্যার ইতিহাস মুছে ফেলতে চায়। এখানে গান-বাজনার আয়োজনের মাধ্যমে মানুষের মনকে বিঘ্নিত করতে চায়। সরষের মধ্যে ভূত আছে। তা নাহলে এগুলো কেন বন্ধ হবে না!
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের বনভোজন করার জন্য আলাদা জায়গা দেয়া হয়েছে এবং বধ্যভূমির সামনে বনভোজন করতে নিষেধ করা হয়েছে। দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।