এস এম রাফি, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) ১৫ এপ্রিল ২০২৪ , ৩:৩২ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের চিলমারীর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে আগামীকাল (১৬ এপ্রিল, মঙলবার) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমীর স্নান অনুষ্ঠিত হবে, উৎসবকে ঘিরে চলছে প্রস্তুতি। পুলিশ প্রশাসনসহ স্নান উৎসব কমিটির শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন। ৫ লাখের বেশি সংখ্যক পূর্ণ্যার্থী স্নান উৎসবে অংশ নেবেন। ইতিমধ্যে সকাল থেকে বেশ কয়েকটি জেলা থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আসতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র পাড় ঘিরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে পূর্ণার্থীদের আশ্রয়ের জন্য।
এবার স্নানের জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের রমনা ঘাট থেকে জোড়গাছ ঘাটের মধ্যবর্তী স্থানে নন্দির মোড় এলাকায়। ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের ২ কিলোমিটারেও বেশি জায়গা জুড়ে এ উৎসব পালন করা হবে।
এবার যত্রতত্র চাঁদা বন্ধে বাড়তি নজর রাখার কথা জানিয়েছেন চিলমারী মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, নির্দ্দিষ্ট স্থান ব্যতিত যদি কোথাও যেকোনো যানবাহন আটকিয়ে চাঁদা নেয়া হয় তাহলে তাদেরকে আইনের আওতায় নেয়া হবে। থানা পুলিশের ১৪০ পুলিশ সদস্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাবেন।
স্নান উৎসব কমিটির জানায়, এ বছর চিলমারীতে স্নানে অংশ নেবেন ৫ লাখেরও বেশি পূর্ণ্যার্থী। আজ সন্ধ্যা থেকে আগামীকাল সারাদিন স্নানের চলবে। তবে মূল স্নান হবে কাল ভোর ৪ টা থেকে বিকেল ৪টা ৫৬মিনিট পর্যন্ত। এবার কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠ পর্যায়ে ১৪০ জন পুলিশ সদস্য থাকবেন। কমিটির পক্ষ থেকে ১৩০জন স্বেচ্ছাসেবক সহযোগীতা করবেন।
হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য শৌচাগার থাকবে ৩০টি, পানির ব্যবস্থার জন্য নলকূপ রয়েছে ২০টি, কাপড় পরিধানের জন্য থাকবে ৭০টিরও বেশি বুথ। পাশাপাশি কন্ট্রোল রুমে মেডিক্যাল টিম থাকবেন তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে।
স্নান উৎসব কমিটির সদস্য সচিব কর্ণধর বর্মা জানান, আজ সন্ধা থেকে স্নান শুরু হবে। স্নান উৎসবকে সফলভাবে করতে প্রশাসন সর্বাত্মাক সহযোগীতা করছেন। পূর্ণ্যাথীদের জান মালের নিপত্তায় আমাদের সহযোগীতা করছেন থানা পুলিশ। তিনি জানান, কোথাও যদি কোনো দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে সেটি আজ সন্ধ্যা থেকে আগামীকাল ভোর পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে হতে পারে। তাই পুলিশ প্রশাসন সহ যারা আছেন আশাকরি তারা এই সময়ে আমাদের সহযোগীতা করবেন।
পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মিলন চন্দ্র বর্মন জানান,দুর-দুরান্ত থেকে আসা পূন্যার্থীদের জন্য আশ্রয় এবং খাবারের ব্যবস্থাসহ সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উলিপুর সার্কেল) মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে এবং নির্বিঘ্নে স্নান উৎসব পালনে সর্বোচ্চ ভুমিকায় থাকবেন পুলিশ। এরই মধ্যে যদি কোথাও কোনো অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা মনে করেন তাহলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য বা সংশ্লিষ্টদের অবগত করবেন।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিনহাজুল ইসলাম জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সবসময় নজরদারি রাখছি, খোঁজ নিচ্ছি। যাতে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে নির্বিঘ্নে অষ্টমীর স্নান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া রাস্তাঘাটে যদি চাঁদা নেয়া হয় প্রশাসনকে অবগত করবেন।
যে কারণে অষ্টমীর স্নান-
প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুল্ক পক্ষের অষ্টমী দিনে এই মেলাটি হয় বলে এই মেলার নামকরণ করা হয়েছে“অষ্টমীর মেলা”। জমদগ্নি ঋষির পুত্র ছিল ভূন্ডুরাম।হিন্দু শাস্ত্র ‘চৈতন্যম্মৃত’ মতে জানা যায়,এই জমদগ্নি ঋষির নিবাস স্থল ছিল বগুড়ার মহাস্থান গড়ে।তিনি খুব গুণী ঋষি ছিলেন।এক দিন জন্মদগ্নি ঋষি তার পুত্র ভূন্ডুরাম কে ডেকে বললেন ‘পুত্র, আমি কি তোমার পিতা? প্রশ্ন শুনে ভূন্ডুরাম অবাক হলেন এবং মাথা ঝাঁকিয়ে দিয়ে বললেন হ্যাঁ,অবশ্যই তুমি আমার পিতা।তখন জমদগ্নি ঋষী পুত্রের নিকট এসে অত্যান্ত সোহাগের সাথে সূধালো ‘আমি যদি তোমাকে কোন কঠোর নির্দেশ প্রদান করি,তা কি তুমি পালন করবে পুত্র’ পূর্বের মতো এবারেও ভূন্ডুরাম মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করলে জমদগ্নি ঋষী পুত্রকে নির্দেশ দিলেন ‘যাও, এই মুহূর্তে কুঠার দিয়ে তোমার মাতা ও চার ভ্রাতাকে হত্যা কর’। পিতার এহেন অমানবিক নির্দেশ শুনে ভূন্ডুরাম কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে গেল।জমদগ্নি ঋষী পুত্রকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আবারও বলেন ‘যাও পুত্র পিত্রাদেশ পালন কর,নচেৎ তুমি আমার কঠিন অভিশাপে অভিশপ্ত হবে’। উপায় অন্ত খুঁজে না পেয়ে অবশেষে ভূন্ডুরাম কুঠারের আঘাতে মা ও অপর চার ভাইকে হত্যা করল। কিন্তু একি কুঠার তো আর হাত থেকে পড়ছে না।ভূন্ডুরাম তখন ঐ অবস্থায় পিতৃচরণে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে লাগলো এবং বলতে লাগলো ‘পিতা আমি তো পিত্রাদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি, এবার তুমি তোমার গুণের বলে আমার মা ও চার ভ্রাতাকে জীবিত করে দাও। পুত্রের কান্না দেখে পিতার মন অবশেষে শীতল হল, ঋষী তার মৃত স্ত্রী ও চার পুত্রের জীবন দান করলেন।একটি সমস্যার সমাধান তো হলো বটে, কিন্তু ভূন্ডুরামের হাত থেকে কুঠার তো আর খুলছে না।আবার ভূন্ডুরাম পিতার চরণে মাথা রাখলেন,বললেন ‘পিতা আমার হাত থেকে কুঠার পড়ছে না’? তুমি মাতৃহত্যা করার পাপে অভিশপ্ত পুত্র। অভিশাপ মোচন না হওয়া পর্যন্ত কুঠার তোমার হাত থেকে পড়বে না বৎস। পুত্র ভূগুরাম পিতার চরণে পুনরায় মাথা ঠুকতে লাগলেন এবং বলতে লাগলেন হে পিতাঃ এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবো কিভাবে তুমি বলে দাও‘।অবশেষে জমদগ্নি ঋষী বললেন,তুমি যদি এ অভিশাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে চাও, তাহলে তোমাকে ওই কুঠার হাতে নিয়ে সমস্ত পীঠস্থান ভ্রমণ করতে হবে এবং সমস্ত পীঠস্থান ভ্রমণ শেষে যেতে হবে কোশলের বিষ্ণুদশা নামে পরিচিত দ্বিজের নিকট।তবেই তিনি তোমার এ অভিশাপ মোচনের পথ দেখিয়ে দিবেন।কি আর করা? অবশেষে ভূন্ডুরাম পিতার পরামর্শ মত নিজ শরীরের সাথে আটকে যাওয়া অভিশপ্ত কুঠারটি নিয়ে চষে বেড়াতে লাগল গোটা ভারতবর্ষে যতগুলো পীঠস্থান আছে সর্বত্র।পৌছে যায় বিষ্ণুদশা দ্বিজের নিকট।বিষ্ণুদশা ভূন্ডুরামের অভিশপ্ত হবার সমস্ত কাহিনী মনোযোগ দিয়ে শুনলেন এবং বললেন,যাও মানস্ সরবরে।সেখানে গিয়ে পর্বত কেটে হ্রদ সৃষ্টি কর।যে দিন তুমি পর্বত কেটে সৃষ্ট হ্রদের সেই জলে স্নান করতে পারবে,ঐদিনই হবে তোমার মুক্তি।
ভূন্ডুরাম ছুটে চললো মানস সরবরে এবং সেখানে পৌঁছে পর্বত কাটতে লাগলো। এভাবেই দিনের পর দিন, রাতের পর রাত বিরামহীনভাবে পর্বত কাটতে কাটতে একদিন ব্রহ্মপুত্র হ্রদ সৃষ্টি হলো, জলের স্রোতে ডুবে গেল ভূন্ডুরাম।
কথিত আছে যে, ভূন্ডুরাম পর্বতের পাদ্বদেশে ডুবে যাবার পর চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ত্রি-স্রোতের মাঝে ভেসে উঠেন এবং তার হাত থেকে কুঠার পড়ে যায়।ভূন্ডুরাম মাতৃহত্যার অভিশাপ থেকে মুক্তি পান।ঐদিনটি ছিল চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথি।সেই থেকে এই ধর্মের অনুসারীগণ জীবনের সকল পাপ মোচনের জন্য প্রতি বছর নির্দিষ্ট এই দিনটিতে স্নানের জন্য ছুটে আসেন চিলমারীতে।(মহাভারত,পৃষ্ঠা-১০০৩ শেখক শ্রী কাশিরাম দাস)।
মেলায় পূন্যার্থীরা যা করেনঃ
এই দিনটিতে শত শত হিন্দু সম্প্রদায়ের নরসুন্দররা চলে আসে স্নান কেন্দ্রে।তারা সবাই নদীর পানির নিকটবর্তী উপকন্ঠে বালুর উপর পীড়ি পেতে বসেন সারিবদ্ধ হয়ে।পুন্যার্থীরা সেলাই বিহীন বস্ত্র পড়ে (ধুতি) প্রথমে জলে নেমে শরীর ভিজিয়ে নেন এবং ভেজা শরীরে এসে কুশান পেতে বসে নর-সুন্দরের সামনে।অবশ্য মাথা নেড়ে করবার পূর্বে কিছু শাস্ত্রীয় ব্যাপার রয়েছে।এর জন্য পূণ্যার্থীকে সংগ্রহ করে আনতে হয় আগরবাতি, কলার কচি পাতা, বেল পাতা, ফুল, তুলশি পাতা, আতব চাল আর মালভোগ বা শবরী কলা। এসব একটি পাত্রে ঘেটে মেখে তৈরি করা হয় প্রসাদ। প্রতিটি নর-সুন্দরের পার্শ্বেই শাস্ত্রীয় দিকটি দেখবার জন্য একজন ব্রাম্মন থাকেন।এই দিকগুলি ঐ ব্রাম্মণরা করে থাকেন। যখন নর-সুন্দর ব্যক্তিটি মাথা নেড়ে করতে থাকেন তখন ব্রাম্মন নর-সুন্দর ব্যক্তিটিসহ পূণ্যার্থীর মাথার উপরে এবং শরীরে মন্ত্র পরে ঐ সকল ফুল, ঘাস ইত্যাদি ছিটিয়ে আত্মার শুদ্ধি করে থাকেন।এসময় অনেক পূর্ণ্যাথী আবার সমস্ত মাথা নেড়ে করে সামান্য একটু মাঝের চুল রেখে দিয়ে টিকি তৈরী করে সেখানে ফুল বেঁধে নেয়।অতঃপর পূণ্যার্থী জলে নামেন। অনেকে আবার জ্যান্ত পাঠাদান বা কবুতর উৎসর্গ করেন দেবদেবীর নামে।আবার অনেকে জলে নেমে পিন্ডিদান ও অস্থি নিক্ষেপ করে থাকেন।এই মেলায় আদ্য শ্রাদ্ধ করতেও আসেন অনেকে। হিন্দু মহিলারা আবার মাথা মুন্ডন করেন না। তারা জলে নেমে শাস্ত্র মতে কলার ঢাকনা দিয়ে তৈরি নৌকা ভাসিয়ে জলে ডুব দিয়ে এক ফেত্তা কাপড় মুড়িয়ে জল থেকে উঠে এসে কাপড় বদলিয়ে ব্রহ্মপুত্র স্নান সম্পন্ন করে থাকেন। এভাবেই হিন্দু সম্প্রদায় নানা ধরণের শাস্ত্রীয় দিক পালনের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র স্নান করে থাকেন। অষ্টমীর স্নানের পর অনেকে সাধু সন্ন্যাসীদের নিকট থেকে আর্শিবাদ গ্রহণ করেন। এসকল সাধু সন্ন্যাসীরা ভস্ম (চন্দন কাঠের গুড়া) গায়ে মেখে, অথবা ছাই মেখে রুদ্রাক্ষের মালা গলায় ঝুলিয়ে হাতে কপালে তীলক চিহ্ন একে ধ্যানে বসেন। পুন্যার্থীরা সাধু বাবার চরণে প্রণাম করে আশির্বাদ গ্রহণ করে থাকেন এবং তারা সাধু বা সন্ন্যাসীদেরকে বিনিময়ে দেন নজরানা হিসেবে টাকা পয়সা ইত্যাদি। অষ্টমীর স্নানের তারিখ আসবার এক মাস পূর্ব থেকেই এই জাতীয় সাধুদের ভীড় জমতে দেখা যায়।
এই মেলাটিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য স্থানীয় প্রশাসন বরাবরই মেলা শুরু হবার কয়েক দিন পূর্ব থেকে বিভিন্ন রেল, নৌ এবং বাস ষ্টেশনগুলোতে দিবা রাত্রি পুলিশ টহলের ব্যবস্থা গ্রহণ করে পূন্যার্থীদের নিরাপত্তা বিধান করেন। মেলার শান্তি শৃংখলা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতি বৎসর অস্থায়ীভাবে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়ে থাকে। পূন্যার্থীরা যাতে বিশুদ্ধ পানি পান করতে পারে তা নিশ্চিত করবার জন্য মেলার বিভিন্ন জায়গায় টিউবওয়েল বসানো হয়ে থাকে। বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীদের থাকবার জন্য বিভিন্ন জায়গায় মেলা পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে তাবু খাটানো হয়। এই সকল তাবুতে সারা রাত ধরে চলে একনাম জপ ও কীর্তন। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ঢোল, ঢাক, বাঁশি, জুরি, তবলা, হারমনিয়াম বাঁজিয়ে হরিনাম জপতে জপতে ব্রহ্মপুত্র স্নানে আসেন। ব্রহ্মপুত্র স্নানে আসা পুন্যার্থীরা স্নান শেষে বাতাসা (ভেটি স্বরুপ) হরিলুট দিয়ে স্নানের সমাপ্তি ঘটায়।
চিলমারীর অষ্টমীর মেলায় নানান জাতি, নানান রং এর সাংস্কৃতিক সমারোহ, এখানে পুতুল নাচ চলে।অষ্টমীর মেলায় কুষাণ যাত্রা বা মেটো গান যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্য বহন করে আসছে এ মেলার।পুর্বে মেলাটি হত তিন দিন ধরে।আর এখন দীর্ঘ ৫মাইল বিস্তৃত গরুর গাড়ীর বহর দেখা যায় না।গরুর গাড়ীর স্থান দখল করে নিয়েছে রিক্সা,ভ্যান,অটো,নছিমন আর মটর বাইক,রেলগাড়ী, এখন চিলমারীর রমনা বাজার পর্যন্ত আসে। কুড়িগ্রাম থেকে চিলামারী সেই বিস্তীর্ণ মেঠো পথে বসেছে খোয়া আর পীচ।সে পথে চলে চার চাকার বাস। আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় আজ চিলমারী অনেক পরিবর্তিত। কিন্তু দুঃখ শুধু একটিই আর তা হলো আধুনিকতার পরশে বিলীন হয়ে যাচ্ছে লোক ঐতিহ্যমন্ডিত অষ্টমীর মেলার পুর্বের ইমেজ,দেশ বিভক্তির পর আজ চিলমারী বন্দর অবহেলিত,এলাকার হিন্দুরা চলে গেছে অধিকাংশই ভারতে। আজ যারা রয়েছে তারা অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু।তারপরও আজও মেলা হয়।আসে মানুষ।বাংলাদেশের আর অন্য জায়গার মেলা থেকে চিলমারীর অষ্টমীর মেলা ভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আগামী শতাব্দীতে পা রাখবে। চিলমারীর সংগ্রামী জনতা প্রতি বছর এই দিনটিতে অসম্প্রদায়িকতার উজ্জ্বল পথিকৃৎ হয়ে প্রতীয়মান হবে সারা বাংলায়। ভূলে যাবে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র। চিলমারীর মানুষ এবার প্রমাণ করবে রাম-রহিমের সত্যিকারের চারণ ভূমি এই চিলমারী বন্দর।