অনলাইন ডেস্ক ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৭:৪০ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
প্রধান বিচারপতির বাসায় হামলার ঘটনায় রমনা থানায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মো. সেলিমের নেতৃত্বাধীন একটি ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এদিন সকাল ১১টার দিকে শুনানি শুরু হয়। শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না। তাকে ওইদিন গ্রেফতার করা হয়নি। তিনি হামলার নির্দেশ দেননি। তিনি অসুস্থ, চিকিৎসা নিতে হয় তাকে। এই মামলায় শাহজাহান সাহেবকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এরপর জয়নুল আবেদীন আদালতে জামিনের পক্ষে কিছু রেফারেন্স তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, আসামি একটি দলের মহাসচিব, তার ডাকে সারাদেশ থেকে লোকেরা আসে। হামলা করেন। পরে আদালত জামিন না দিয়ে রুল দেওয়ার কথা জানান।
আদালত জানান, আমরা রুল দিচ্ছি। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ফজলুর রহমান খান, সুব্রত চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও বদরুদ্দোজা বাদল উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত সোমবার (৪ ডিসেম্বর) হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশের দিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত হন। আহত হন অর্ধশত পুলিশসহ অনেকে। সংঘর্ষের সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা হয়।
ওই ঘটনায় রমনা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলায় মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ ৫৯ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
ফখরুল-আব্বাস ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।
সংঘর্ষের পরদিন ভোরে ২৯ অক্টোবর মির্জা ফখরুলকে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। ওইদিন রাতে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালানোর মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ডিবি অফিস থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক হুমায়ন কবীর খান।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরবর্তী সময়েও একবার ফখরুলের জামিন আবেদন করা হয়। তবে তা নাকচ হয়ে যায়।