সারাদেশ

মেডিকেলে ভর্তি পেয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন মাজেদুল

  এস এম রাফি,কুড়িগ্রাম ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ , ৪:২৫ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

দরিদ্র পরিবারের সন্তান মাজেদুল। এবার ভর্তি পরিক্ষায় মেডিকেলে সুযোগ পেলেও ভর্তি খরচ ও পড়াশোনা এগিয়ে নিতে দুচিন্তায় পড়েছে পরিবার। অভাব অনটনের সংসারের মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন আর বাবা কাজ করেন কাঠ মিস্ত্রির। এখন ভর্তি নিয়ে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন মেধাবী মাজেদুল ও তার পরিবার।

মাজেদুলের বাড়ি কুড়িগ্রাম শহরের পৌর এলাকার ভরসার মোড় সংলগ্ন করিমের খামার গ্রামে। তার বাবার নাম মো. আবুল হোসেন, মায়ের নাম মোছা. মর্জিনা বেগম। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে ছোট। বড়ভাই কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে অনার্স পড়ছেন। মাজেদুল মাগুরা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছে। মেধা তালিকায় ক্রম ৫০৩২ ক্রম।

মাজেদুল কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০২২ সালে গোল্ডেন এ প্লাস নিয়ে এসএসসি পাশ করেন। এরপর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ২০২৪ সালে গোল্ডেন এ প্লাস নিয়ে এইচএসসি পাশ করেন।

মাজেদুলের মা মর্জিনা বেগম জানান, মাজেদুল ছোট থেকে পড়াশোনায় ভাল ছিল। এরপর থেকে শিক্ষকরা তাকে সহযোগীতা করেছেন। এভাবেই চলে আসছে।

তিনি বলেন, তার বাবা কাঠমিস্ত্রী কাজ করে সংসার চালান। আর আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করে চলছি। অভাবের সংসারে এখন ছেলের পড়ালেখার খরচ দেয়া খুব কষ্ট হবে। এখন কেউ যদি সহযোগীতা করে তাহলে ছেলেটা ভাল ভাবে পড়ালেখা শেষ করতে পারবে।

মাজেদুল ইসলাম জানান, ছোট বেলা থেকে অনেক কষ্ট করে লেখা পড়া করেছি। অনেক বাঁধা পেরিয়ে এই পর্যন্ত এসেছি। আমার বাবা কাঠ মিস্ত্রির কাজ করেন আর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। আমার বড় ভাই কুড়িগ্রাম কলেজে পড়ে। সে আবার প্রাইভেট পড়িয়ে চলে।

মাজেদুল বলেন, আমি নিজে এলাকায় দুটো টিউশনি করে এতোদিন নিজের খরচ চালিয়েছি। কিন্তু মেডিকেলে পড়ার খরচ জুটবে কীভাবে? আমার সাথে বাবা-মা দুশ্চিন্তায় আছেন। সামর্থের সীমাবন্ধতা জানিয়ে বলেন মাজেদুল।

মাজেদুলের সাফল্যে প্রতিবেশি আলামিন, আব্দুল জলিল বলেন, মাজেদুল ছোট থেকেই কষ্ট করে পড়ালেখা করছে। সে সুযোগ পেয়েছে জন্য আমাদের এলাকারও সুনাম হচ্ছে। আমরা চাই সে আরও ভাল করুক সামনে।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা নাসির উদ্দিন বলেন, মাজেদুল মেধাবী শিক্ষার্থী। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সে তার মেধার প্রমাণ দিয়েছে। কিন্তু তার পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। সমাজের সামর্থবানরা এগিয়ে আসলে মাজেদুল তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। একদিন চিকিৎসক হয়ে দেশের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে পারবে।