uadmin ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৫:২৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
সদরুল আইনঃ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার শুরুর আর মাত্র দুদিন বাকি। আগামী রবিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ এবং পরদিন ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ ও প্রচার শুরুর দিন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলো ইতোমধ্যে প্রচারের যাওয়ার কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে অন্যদের আসন বণ্টন বা সমঝোতা নিয়ে বৈঠকের পর বৈঠকও চলছে।
তবে নির্বাচনের পথে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসেও বর্তমান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) যেন কোথাও নেই। বিভিন্ন দিবস, শোক কিংবা অভিনন্দন বার্তা ছাড়া তাকে কোথাও কিছুা বলতেও দেখা যাচ্ছে না।
এমনকি দলীয় কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না। তার এই নীরবতায় কৌতূহল দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এর মধ্যে দলীয় বিষয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিএম কাদের এখনো প্রায় নিয়মিতই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসেন। গতকাল তিনি এসেছিলেন বলে কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। তবে গত ১৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে সর্বশেষ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তাকে আর কোথাও কথা বলতে দেখা যায়নি।
দলের বৈঠকে অংশ নিয়ে ইতোপূর্বে তিনি নিজেই সাংবাদিকদের অবহিত করতেন। কিন্তু গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি ‘নীরবতা’ পালন করছেন, যা কারও কারও কাছে রহস্যজনক মনে হয়েছে। এই সময়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এককভাবে কথা বলছেন মুজিবুল হক চুন্নু।
গতকাল বৃহস্পতিবার তার নীরবতার বিষয়ে জানতে চেয়ে হোটাসঅ্যাপ নম্বরে নক করা হয়। তিনি হোটাসঅ্যাপ ম্যাসেজ দেখলেও (সিন) কোনো সাড়া দেননি।
জিএম কাদের কেন এমন নীরবতা পালন করছেন জানতে চাইলে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু জানান, দলের পক্ষ থেকে আমাকে স্পোকম্যান (মুখপাত্র) করা হয়েছে। তাই আমি এককভাবে কথা বলছি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে জাতীয় পার্টির। সে সব বৈঠকেও জিএম কাদেরকে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে চুন্নু বলেন, ‘এসব বৈঠক দলের মহাসচিব বা প্রেসিডিয়াম পর্যায়ে হয়েছে। তাই দলের পক্ষে আমি এবং ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ গিয়েছি।’
জিএম কাদেরের এই নীরবতার বিষয়ে দলগত বা আইনগত কোনো জটিলতা আছে কিনা জানতে চাইলে দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ বলেন, ‘জিএম কাদের কেন কথা বলছেন না তা আমি জানি না। এ বিষয়ে তার সঙ্গে আমার কোনো আলাপ হয়নি।’
গত ৩ নভেম্বর জাতীয় পার্টির (জাপা) সিদ্ধান্ত গ্রহণে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত। একই সঙ্গে তার দলীয় কার্যক্রম গ্রহণেও অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। জাপা থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া নেতা জিয়াউল হকের দায়ের করা এক মামলার শুনানি নিয়ে যুগ্ম জেলা জজ মাসুদুল হক আদেশটি দিয়েছিলেন।
পরে ওই বছরের ২৯ নভেম্বর নিম্ন আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এরপর গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনী জোটে না নেওয়ার অনুরোধ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনকালে জিএম কাদেরকে অবৈধ চেয়ারম্যান বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জিএম কাদেরের নীরবতার বিষয়ে রওশনের মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘জিএম কাদেরের কথা বলার মতো নৈতিক কোনো শক্তি নেই। তিনি দলে এবং নির্বাচন সামনে রেখে নানা কুকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। এ জন্যই তিনি কোনো কথা বলছেন না।’