রাজনীতি

রুমিন ফারহানা-গিয়াস উদ্দিন মামুনের বাগদানের গুঞ্জন

  এস এম রাফি ৫ অক্টোবর ২০২৩ , ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

একজন সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন টকশোতে দাপিয়ে বেড়ান। নানা রকম সমালোচনা মূলক কথাবার্তা বলেন। নীতি বাক্যের ডালি সেজে বসান।

অন্যজন মহা দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতির দায়ে প্রায় শতবর্ষের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় তার যে দণ্ড তা শেষ হতে কত বছর লাগবে সেই হিসেব করতে আইনজীবীদের ঘর্মাক্ত হতে হয়।

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো কারান্তীণ গিয়াসুদ্দিন মামুনের সঙ্গে রুমিন ফারহানার বাগদানের গুঞ্জন এখন চাউর হয়েছে রাজনৈতিক পাড়ায়। বিএনপির মধ্যেও এ আলাপ-আলোচনা এখন সরগরম।

একাধিক সূত্র বলছে, কারান্তরীণ গিয়াস উদ্দিন মামুনের সঙ্গে রুমিন ফারহানা সাম্প্রতিক সময়ে বাগদান সম্পন্ন হয়েছেন। কারাগারে গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে দেখতে গেছেন একাধিকবার রুমিন ফারহানা। আর এর মধ্যে দিয়ে তাদের প্রেম এবং এখন বাগদানে গড়িয়েছে।

এই বিষয়টি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলো এখন অনুসন্ধান করছে এবং তথ্যানুন্ধানের চেষ্টা করছে।

গিয়াসউদ্দিন আল মামুন তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর গিয়াস উদ্দিন মামুন হয়ে যান ক্ষমতার অন্যতম ভাগীদার। বিভিন্ন টেন্ডার, সরকারি কেনাকাটা এমনকি বদলি এবং পদোন্নতি বাণিজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা অর্থ উপার্জন করেন গিয়াস উদ্দিন।

হাওয়া ভবনের অকথিত সেনাপতি ছিলেন তারেক জিয়ার এই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। শুধু হাওয়া ভবন নয়, ক্যান্টনমেন্টে বেগম খালেদা জিয়ার তৎকালীন বাসাতেও আস্তানা গেড়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন মামুন।

এক-এগারো পর্যন্ত সময় বাংলাদেশের সকল ব্যবসা এবং বড় বড় ঠিকাদারের মূল নিয়ন্ত্রক ছিলেন এই দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিবাজ। তারেক জিয়ার ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে ইচ্ছেমতো শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। বিভিন্ন ব্যক্তিকে ব্ল্যাকমেইল করে হাজার হাজার কোটি টাকা বানিয়েছেন।

এক-এগারোর সময় গ্রেপ্তার করা হয় গিয়াস উদ্দিন মামুনকে। তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি তারেক জিয়ার যোগসাজশে হাজার হাজার কোটি টাকার অর্থ উপার্জনের কথা স্বীকারও করেছিলেন। একাধিক দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিনি এখন কারান্তরীণ রয়েছেন।

অন্যদিকে রুমিন ফারহানা বিএনপির রাজনীতিতে আলোচনায় আসেন ২০১০ এর পর থেকে। এই সময় তিনি বিভিন্ন টকশোর মাধ্যমে আলোচিত হতে থাকেন।

এক সময় তারেক জিয়ার নজরেও পড়েন। তারপর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বিএনপির অনেক সিনিয়র নারী নেত্রীকে বাদ দিয়ে তাকে পার্লামেন্টে পাঠানো হয় সরকারের সমালোচনা করার জন্য। টকশোর সুবাদে আলোচিত এবং পরিচিত হলেও সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা রুমিন ফারহানার নেই।

তার নিজ নির্বাচনী এলাকাতেও
তিনি অপাংতেয়। নারী কোটায় এমপি থেকে পদত্যাগ করার পর টকশোর মাধ্যমে তিনি এখনো আলোচিত। কিছুদিন আগেও তিনি বিভিন্ন দূতাবাসে যেতেন বিএনপির প্রতিনিধি হিসাবে।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেখানেও তার আর ডাক পড়ছে না। আর রাজনীতিতে তিনি টিকে আছেন শুধুমাত্র তারেক জিয়ার বদান্যতায়। এটাই অনেকে মনে করেন।

তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠতম বন্ধুর সঙ্গে তারেক জিয়ার পছন্দের রাজনীতিবিদের ঘনিষ্ঠতার খবর পাওয়া যায় তিন মাস আগে থেকেই। তারপর এই ঘনিষ্ঠতার খবর বাড়তে থাকে।

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যে, জেলে থাকা অবস্থায় কিভাবে বাগদান সম্পূর্ণ হল। এ নিয়ে তদন্ত করছে বিভিন্ন মহল। তবে এ কথা সত্য যে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন এবং রুমিন ফারহানার মধ্যে এখন সম্পর্কটা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক গভীরে।