চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ২৯ নভেম্বর ২০২৩ , ৬:২৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে গত সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্প ‘বীর নিবাসের’ কাজ বন্ধ রয়েছে। ঘরের কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুবিধাভুগীরা। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দাবী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার বলার পরও কাজ করছেন না।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে (২য় পর্যায়) চিলমারী উপজেলায় বাস্তবায়নের নিমিত্ত অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩৫ টি বীরনিবাস নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ৮ হাজার ২৬৬ টাকা।
অফিস জানায়, ৫ টি ঘরকে একটি প্যাকেজ আকারে মোট ৭ টি প্যাকেজের মাধ্যমে ৭ জন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যেমে এসব কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক ঘরের কাজও শেষ হয়েছে।
অভিযোগ ওঠেছে, ৬ নম্বর প্যাকেজের আওতায় উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নে ৫ টি ঘর নির্মাণে কিছু কাজ করার পর গত সাত মাসেও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। এই সব কাজ করছেন মো. রেজওয়ান আলী চিলমারী, কুড়িগ্রাম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে দেখা যায়, রমনা মডেল ইউনিয়নের রমনা খামার এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. ইছহাক আলীর বরাদ্দ প্রাপ্ত বীরনিবাসের কাজ ৭ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে৷ বেশির কাজই বাকি রয়েছে। এর মধ্যে ছাদে রড কম দেয়ার অভিযোগ করেছেন ওই মুক্তিযোদ্ধা।
অন্যঘর গুলোয় দেখা গেছে, নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। বেশিরভাগ বীর নিবাসের নিলটন ও দেওয়াল পর্যন্ত ইট গেঁথে কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে গেছে ঠিকাদারের লোকজন। এতে দেয়ালে নোনা ধরা সহ খোসে পড়ছে ইট পলেস্তারা। মুক্তিযোদ্ধা পরিবার অনেকেই নতুন ঘরের আশায় পুরাতন বসতঘর ভেঙে ফেলেন । তবে সময় মতো কাজ শেষ না হওয়ায় টিনের চালা কিংবা অন্যের ঘরে বসবাস করতে হচ্ছে তাদের।
রমনা ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ঘরের কাজ প্রায় ৮ মাস থেকে চলছে কিন্তু এখন পর্যন্ত শেষ হচ্ছে না।তাছাড়া ঘর নির্মাণের সময় নিম্ন মানের ইট ও খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে বারবার বলা সত্বেও সেগুলো পরিবর্তন করা হয়নি। এসময় তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ঘর নিয়ে খুব বিপদে আছি। বীর নিবাসের জায়গার জন্য আমার পুরাতন বসতঘর ভেঙে ফেলেছি কিন্তু নিদিষ্ট সময় পার হলেও শেষ হয়নি কাজ। আমি খুব কষ্টে দীর্ঘদিন যাবত আমার ছেলের ঘরে থাকতেছি।
রমনা খামার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইছহাক জানান, সরকার আমাকে একটা বীর নিবাস বরাদ্দ দিয়েছে। ৭ মাস আগে আমার বসতভিটায় ওই বীর নিবাসের কাজ শুরু হয়। কিন্তু ৬ মাস ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছেন ঠিকাদারের কোন খোঁজ খবর পাচ্ছি না। বীর নিবাসের নির্মাণ কাজের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও কেন কাজ শেষ হয়নি এই বিষয়টি বহুবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হলেও তারা কর্নপাত করেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
ধীরগতি কেনো জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রেজওয়ান আলী জানান, একজনকে কাজ গুলো দিয়েছিলাম এখন কাল থেকে কাজ শুরু না করলে আমি আগামী রোববার থেকে কাজ শুরু করব।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার মৌখিক ও লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য।