এস এম রাফি ১০ অক্টোবর ২০২৩ , ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
একের পর এক বিএনপির বিভিন্ন নেতারা মামলায় দণ্ডিত হচ্ছেন। বর্তমানে নির্বাচন বিধি অনুযায়ী একজন ব্যক্তি নিম্ন আদালতেও যদি দণ্ডিত হন তাহলে তিনি নির্বাচনের অযোগ্য হবেন।
যতক্ষণ পর্যন্ত না আপিল করে তার দণ্ড স্থগিত করা না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। আর এই আইনের কারণে বিএনপির প্রায় ৮৮ জন প্রার্থী এখন নির্বাচনের অযোগ্য হয়ে গেছেন।
সামনের দিনগুলোতে আরও কিছু মামলার রায় হবে এবং এক্ষেত্রে বিএনপির সম্ভাব্য যারা প্রার্থী আগামী নির্বাচনে হবেন তারা প্রায় সকলেই নির্বাচনের অযোগ্য হয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া, লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া নির্বাচনের অযোগ্য হয়ে গেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু একটি মামলায় দণ্ডিত হয়ে নির্বাচনের অযোগ্য হয়েছেন।
নির্বাচনের অযোগ্য আছেন বিএনপির নেতা আমানউল্লাহ আমানও। তিনি একটি মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। এছাড়াও বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং পাবনা থেকে নির্বাচন করার প্রত্যাশী হাবিবুর রহমান হাবিব আজ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: জসিমের আদালতে একটি মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন।
ফলে তিনিও নির্বাচনের অযোগ্য হলেন। নোয়াখালী-৪ আসনের মো: শাহজাহান একটি নাশকতার মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। তিনিও নির্বাচনে অযোগ্য। কুষ্টিয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আহসান হাবিব লিঙ্কন একটি নাশকতার মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। ফলে তিনিও নির্বাচনের জন্য অযোগ্য ঘোষিত হয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য এখন মামলা গুলোকে দ্রুত নিষ্পত্তি করছে এবং সাজানোর রায়ের মাধ্যমে তাদেরকে দণ্ড দিচ্ছে যেন বিএনপি নির্বাচন করতে না পারে।
তবে সরকারের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে দেখা গেছে, তারা বলছে যে বিচার বিভাগ তার নিজস্ব গতিতে চলছে। এই সমস্ত মামলায় সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নাই এবং আদালত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে দায়িত্ব পালন করছে।
এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপির ৮৮ জন সাবেক এমপি বা মনোনয়ন প্রত্যাশী নির্বাচনের অযোগ্য হয়েছেন এক্ষেত্রে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হতে পারে কিনা এইরকম প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, গত নির্বাচনে বিএনপির একেকটি আসন থেকে ৩ থেকে ৪ জন প্রার্থী হয়েছিল।
কাজেই তাদের ধরেই নেওয়া যায় যে একাধিক প্রার্থী রয়েছে। তাছাড়া এটির সাথে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে আইনজীবীরা বলছেন, নিম্ন আদালতের রায়ের পরে যদি কেউ আত্মসমর্পণ করেন এবং আপিল করেন, আপিলে যদি তার দণ্ড স্থগিত হয়ে যায় তাহলে তিনি নির্বাচনের অযোগ্য থাকবেন না। তিনি নির্বাচন করতে পারবেন।
বিএনপির নেতাদের উচিত তারা যদি নির্বাচন করতে চান তাহলে তাদেরকে আস্তে আস্তে উচ্চ আদালতে যাওয়া এবং উচ্চ আদালতে থেকে দণ্ড স্থগিত করা।
উল্লেখ্য যে, এক-এগারোর সময়ও আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলের অনেক নেতাই দণ্ডিত হয়েছিলেন। দণ্ডিত হবার পর তারা উচ্চ আদালতের নির্দেশে দণ্ড থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করেন এবং দণ্ড স্থগিত করেন এবং এই দণ্ড স্থগিতের মাধ্যমে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
কাজেই যে ৮৮ জনের বিরুদ্ধে দণ্ড হয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে উচিত আত্মসমর্পণ করে নির্বাচনের জন্য যাওয়া। তবে বিএনপির নেতারা এধরনের পদ্ধতিতে না গিয়ে বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন এবং সরকারের পতনের ব্যাপারেই বেশি মনোযোগী।