বিবিধ

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা, বাদ আফিফ

  এস এম রাফি ২২ মার্চ ২০২৩ , ৭:১৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ঠিকমতো খেললেও টি-টোয়েন্টি সিরিজে দেখা যায় ভিন্নতা। একাদশে জায়গা হারান আফিফ হোসেন। পরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে স্কোয়াডে থেকেও মেলেনি সুযোগ। শেষ ম্যাচের আগে ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়ে, এবার টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডেও তাকে রাখা হয়নি। গত সাড়ে ৩ বছর ধরে টানা খেলতে থাকা আফিফের বাদ পড়া অনেকের কাছে চমক হলেও নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বলেছেন, পড়তি ফর্মের কারণেই দলে রাখা যায়নি তাকে। গত বছর সেপ্টেম্বরে দুবাইতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৫৫ বলে ৭৭ রান করার পর কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে খুব একটা আলো ছড়ায়নি আফিফের ব্যাট। সর্বশেষ ১২ ইনিংসে নেই কোনো ফিফটি। টি-টোয়েন্টিতে তিনি যে পজিশনে ব্যাট করেন সেখানে ফিফটি হয়তো জরুরি না, দরকার প্রভাব তৈরি করা পারফরম্যান্স। সেখানেও ব্যর্থ এই বাঁহাতি। ১২ ম্যাচে ১৯.৪০ গড় আর স্রেফ ১১৭.৫৭ স্ট্রাইকরেটে রান করেছেন তিনি। ৭ নম্বরে নেমে ঝড় তোলার যে চাহিদা সেটা মেটেনি তার ব্যাটে। আগামী ২৭ মার্চ শুরু হবে ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি। বাকি দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ২৯ ও ৩১ মার্চ। সবগুলো ম্যাচই আয়োজিত হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।

আফিফকে এবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে না রাখার ব্যাখ্যা একটি গণমাধ্যমকে দিয়েছেন হাবিবুল বাশার, ‘সাম্প্রতিক ফর্ম (আফিফের বাদ পড়ার কারণ)। সাম্প্রতিক সময়ে ওর ছন্দ একটু উঠানামা করছে। এরকম সময়ে আমরা এলাউ করি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে আবার ফর্মে ফেরাটা আরকি। এ জন্য দলের বাইরে রাখা হয়েছে। সে আমাদের ভবিষ্যৎ খেলোয়াড় ও সব সময় বিবেচনায় আছে। হয় কি ফর্ম যখন উঠানামা করে তখন (বাইরে রাখতে হয়)।’

আফিফকে স্কোয়াডে রাখলেও তার একাদশে ঠাঁই পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল ক্ষীণ। এই অবস্থায় বসিয়ে না রেখে চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলতে পাঠানো আদর্শ মনে হয়েছে নির্বাচকদের, ‘এখানে (আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে) একাদশে খেলার সুযোগটা কমে গিয়েছিল তার। যার জন্য বলা হয়েছে বসে না থেকে খেল। আমরা চাই না ঘরোয়া ক্রিকেট চলার সময় কেউ জাতীয় দলের সঙ্গে বসে থাকুক। আমরা চাই যেন খেলার মধ্যে থাকে। সে জন্য তাকে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ঘরোয়াতে। বলে হয়েছে ঘরোয়াতে পারফর্ম কর, তাহলে আবার ফিরতে পারবে।’ মঙ্গলবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডের দল থেকে বাদ পড়ে ঢাকায় ফেরেন আফিফ। বুধবার প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে খেলতে নামেন তিনি। টি-টোয়েন্টি দল থেকে জায়গা হারানোর দিনে ৪১ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় আফিফের। অভিষেক ম্যাচে তিনি কোনো রান করতে পারেননি। লম্বা সময় পর ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর খেলেন দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ফেরার ম্যাচে ২৬ বলে করেন ৫২। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি পর্যন্ত টানা ৬১ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৬২ ম্যাচের ক্যারিয়ারে ৩ ফিফটি করেছেন। ২১.২৫ গড়ে করেন ১ হাজার ২০ রান। তবে স্ট্রাইকরেটটা ১২০.২৮ রেখেছে বড় প্রশ্ন। শেষ দিকের ঝড় তোলার চাহিদা তাতে খুব একটা মেটেনি।

এদিকে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন বাদ পড়া কেউই তাদের চোখের আড়াল হবে না। অর্থাৎ জাতীয় দলের আশপাশেই থাকবেন, থাকবেন নির্বাচকদের আতসি কাঁচের নিচে। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফম্যান্স করলেই আবার খুলবে দরজা। ঘরের মাঠে আইরিশদের বিপক্ষে নতুনদের পরখ করে দেখতে চায় ম্যানেজম্যান্ট। বিশ্বকাপে নজর রেখে বিকল্প তৈরিতে মনোযোগী স্বাগতিকরা। সেই সুবাদে দলে নেওয়া হয়েছে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফর্ম করা অনিক। এ ছাড়া রিশাদ জাতীয় দলের অনুশীলনে বোলিং করতেন সাকিবদের। ম্যানেজম্যান্ট লেগ স্পিনার চাওয়ায় তাকে রেখেছেন নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচক জাকের-রিশাদকে নিয়ে বলেন, ‘জাকেরকে আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরম্যান্স বিবেচনা করে নিয়েছি। ‘এ’ দলেও সে ভালো করেছে। যেহেতু আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে খেলা, আমরা রিশাদকে একটু দেখতে চাই। ম্যানেজম্যান্টও একজন লেগ স্পিনার চাচ্ছিল। সে জন্যই তাকে নেওয়া। সে আমাদের এইচপির সঙ্গে অনেকদিন কাজ করেছে। আশা করি যারা নতুন এসেছে, তারা যেন সুযোগটা কাজে লাগায়।’

বাংলাদেশ দল :

সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন, জাকের আলী অনিক।