চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ২:৫৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে হিসাবরক্ষণ অফিসে উৎকোচ ছাড়া কোনো কাজই হয় না এখন। দীর্ঘদিন থেকে এমন ঘুষ কিংবা উৎকোচ দিতে হচ্ছে সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীদের। যেকোনো কাজের বিনিময়ে দিতে হবে কমিশন। কমিশন দিতে রাজি না হলে কালক্ষেপণ করেন ওই দপ্তরের দায়িত্বশীলরা। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা।
জানা গেছে, উপজেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়টি দীর্ঘদিন থেকে দুর্নীতি ও ঘুষের আখড়ায় পরিনত হয়ে আছে। যেকোন বিল পাশের জন্য টাকা নেয়া যেন অফিসের দায়িত্ববানদের অধিকারে পরিনত হয়েছে।
সূত্র বলছে, জিপিএফ হিসাব নম্বর খোলা, বেতন নির্ধারণ, বকেয়া বিল, জিপিএ চূড়ান্ত বিলসহ যেকোন কাজেই উৎকোচ ছাড়া পাশ হয় না।
বিলের সাথে কমিশন বেঁধে দেওয়া আছে এমন মন্তব্য করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, অফিস গুলোর বিভিন্ন বিল পাশ করতে গেলে আমাদের বিলের ২% থেকে ৫% টাকা হিসাব রক্ষণ অফিসে দিতে হবে, আর এই কমিশন যত দ্রুত দেয়া হবে কাজ দ্রুত হবে, আর না হলে ঘুরতে ঘুরতে সময়ও যাবে আবার কমিশনও দিতে হবে।
সরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীল কয়েকজন বলেন, হিসাবরক্ষণ অফিসের কাজ গুলো করতে গেলে টাকা না দিলে তা হবে না, টাকা দিতেই হবে। সরকার তো তাদের বেতন ভাতা দেন সেবা দেয়ার জন্য, তাহলে কেন কাজ করতে আবার তাদের ঘুষ দিতে হবে যোগ করেন তারা।
প্রাথমিক শিক্ষক শাহজাহান আলী ও হারুন অর রশিদ বলেন, পিআরএল এবং অবসরের কাজ করতে গিয়ে তাকে টাকা দিতে হয়েছে এছাড়াও হয়রানী তো আছেই। কাজ করতে গিয়ে ৩হাজার টাকা উৎকোচ দিতে হয়েছে।
টাকা না দেয়ার কারনে তিনমাস ঘুরে কাজ হয়েছে জানিয়ে একজন কলেজ শিক্ষক বলেন, সেটিও আবার কিছু গন্যমান্য ব্যাক্তি আর মিডিয়ার ব্যক্তিদের সুপারিশে। কমিশন বা ঘুষ না দিলে বা অভিযোগ করলে পরবর্তিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকিসহ হয়রানী করা হয় বলেও ভুক্তভুগিরা নিরবে দুর্নীতিকে মেনে নিয়েই ঘুষ দিয়ে চলছেন বলে মন্তব্য করেন হয়রানীর স্বীকার ব্যাক্তিরা। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে প্রায় বিল গুলো পাশের জন্য মোটা অঙ্কের উৎকোচ ছাড়া পাশ হয় না এবং নড়ে না ফাইল।
ফাহমিদুল নামে এক যুবক বলেন, এই অফিসের তার বাবা ও মায়ের কাজ করতে গিয়ে একাধিকবার ঘুষ দিতে হয়েছে এবং ঘুরতেও হয়েছে।
কলেজ শিক্ষক নিজামুল ইসলাম বলেন, ট্রেজারী (হিসাবরক্ষণ) অফিসে একটি কাজ করতে গিয়ে হয়রানী শিকার হতে হয়েছে এবং টাকাও দাবি করেছিল পরে বিভাগীয় কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে কাজটি সমাধান হয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. শাহানুর ইসলাম বলেন, এমন কোন অভিযোগ আমি পাইনি আর কাজ করতে আসলে কেন টাকা দিবে তারা। বিল পাশের জন্য অফিসের কেউ টাকা চাইলে তারা যেন আমার কাছে আসে বলে জানান এই কর্মকর্তা।