এস এম রাফি ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৮:০৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
জহির রায়হান কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধিঃ-
আজকাল বেশিরভাগ মা-বাবাই সন্তানের মেধা বিকাশে আলো ছড়াচ্ছে ভালো ফলাফলের আশায় বেসরকারি স্কুলের প্রতি আগ্রহী হন। সরকারি স্কুলে ‘লেখাপড়ার মান’নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম চিত্র দেখা গেছে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নেরব ভুতছাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এলাকার অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের নজর কেড়েছে। শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটাতে বিদ্যালয়ের নানা উদ্যোগ বেশ প্রশংসিত হচ্ছে স্থানীয়দের কাছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রংপুর কুড়িগ্রাম মহা -সড়কের শহীদবাগ ইউনিয়নের ভেলুপাড়া বাজার সংলগ্ন দুই দশমিক ৩৩ শতক জমির ওপর এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে বিদ্যালয়টিতে ছয়টি শ্রেণিকক্ষ,৩ জন নারী ও ০৪ পুরুষ শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের জন্য আছে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট। হাত ধোয়ার জন্য রয়েছে বেসিন ও ওযুর জন্য আলাদা ব্যবস্থা পত্রিকা পড়ার জন্য রয়েছে ডাইস। দেয়ালে প্রাচীরে বিভিন্ন শিক্ষাবিদ ও মনীষীদের বাণী শোভা পাচ্ছে। যা শিক্ষার্থী ও জ্ঞান পিপাসু মানুষকে মুগ্ধ করবে। এখানে প্রাক- প্রাথমিক পর্যায়ের জন্য বরাদ্দ রুমটির দেয়ালে শোভা পাচ্ছে শিশুদের উপযোগী বিভিন্ন দেয়াল লিখন। বিদ্যালয়ে রয়েছে দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার । এখানে একটি দ্বিতল ভবন রয়েছে। প্রতিটি ক্লাস রুমে মেঝে টাইলস, বিদ্যালয়ে আলাদা আইসিটি রুম আছে যেখানে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টরের মাধ্যমে শিক্ষকরা আইসিটি জ্ঞান প্রদান করেন । প্রধান শিক্ষক রওশন আরা বেগম ২০১৮ সালে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিদ্যালয়কে একটি ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে। আর এ কাজে সহকারী শিক্ষক এমদাদুল হক লিটন সহ সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি সহযোগিতা করেছেন।
কয়েকজন অভিভাবক জানান, আগে সকলেই মনে করতেন বেসরকারী বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান ভালো। কিন্তু এটা ঠিক যে, ভুতছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেভাবে শিক্ষার মান উন্নয়ন করা হচ্ছে কোন শিক্ষার্থী বেসরকারী বিদ্যালয়ে যাবে না। এ পরিবেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এমদাদুল হক লিটন বলেন, ‘বিদ্যালয় যাতে শিশুদের উপযোগী ও আকর্ষণীয় হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে৷ প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে আমার সবাই চেষ্টা করেছি কাজ করার। প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পড়াশোনার খোঁজ খবর নেয়া হয়।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক আব্দুল ফাকের বলেন প্রধান শিক্ষক যদি সৎ,ন্যায়নিষ্ঠাবান ও আন্তরিক হন এবং বিদ্যালয়টি যদি তিনি নিজের সন্তানের মত মনে করেন তাহলে বিদ্যালয়কে দৃষ্টিনন্দন করা সম্ভব। এমন একটি চিত্র ভুতছাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ সরকার বলেন ভুতছাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সত্যিই অসাধারণ কাজ করেছে। স্কুলের দেয়ালে বিভিন্ন শিক্ষাবিদ ও মনীষীদের বাণী লেখা হয়েছে। বাচ্চারা যেন পড়ায় মনোযোগী হয় সেকারণে নানা আয়োজনও রয়েছে।’ আর প্রধান শিক্ষক রওশন আরা একজন দক্ষ প্রধান শিক্ষক তিনি সরকারি নিয়ম নীতি মেনে নিজের বেতনের কিছু অংশ টাকা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন মুলক কাজ করেন।