বিবিধ

“কুড়িগ্রামে চর মন্ত্রনালয় চাই”বাস্তবায়ন কমিটির রৌমারী উপজেলা শাখার অনুমোদন

  স্টাফ রিপোর্টার: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , ৬:৪৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে চর উন্নয়ন কমিটি কুডিগ্রাম জেলা আহ্বায়ক শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু ও সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম রুবেল কতৃক রৌমারী উপজেলা চর উন্নয়ন কমিটির আংশিক আহবায়ক কমিটি দেওয়া হয়। ইমান আলী ইমনকে আহবায়ক কমিটির প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান তারাকে সদস্য সচিব ও যুগ্ন আহবায়ক হিসেবে মঞ্জুরুল ইসলাম ,আবুল কালাম আজাদ, মশিউর রহমান পলাশ,ও মিজানুর রহমান মিনুসহ ৬ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি প্রদান করেন।
উক্ত কমিটিকে মালা দিয়ে বরণ করেন চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ। বরণ শেষে কমিটির সদস্যরা বক্তব্যে বলেন,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, জেলায় দারিদ্র্যের হার ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) বলছে,জেলায় অতিদরিদ্রদের হার ৫৩ দশমিক ২ শতাংশ। এর অন্যতম কারণ হলো নদী ভাঙ্গন এবং চরে বসবাস কারী মানুষের অনিশ্চিত জীবনযাপন। এ পরিপ্রেক্ষিতে এসডিজির (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে উন্নয়ন বঞ্চিত হয়ে চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবী উঠেছে তৃনমূল থেকে।
সাম্প্রতি কুড়িগামে অনুষ্ঠিত এক নাগরিক সংলাপ থেকে জোড়ালো দাবী জানানো হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রৌমারী উপজেলা চর বিষয়ক আহবায়ক কমিটির আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, কুড়িগ্রাম জেলার চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কুড়িগ্রামে চর মন্ত্রনালয়ের দাবী জানানো হয়। যে চর মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে চরের মানুষের সকল উন্নয়ন বাস্তবায়িত হবে।

কুড়িগ্রাম জেলার জনসংখ্যা ২৩ লাখের কিছু বেশি। জেলাটির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ফুলকুমারসহ ১৬টি নদ-নদী। এগুলোর অববাহিকায় রয়েছে সাড়ে চার শতাধিক চর। প্রায় সাড়ে ৮০০ বর্গ কিলামিটার চরে বসবাস করেন সাড়ে ৫ লাখ মানুষ। এসব চরে বসবাসকারী মানুষের প্রধান আয়ের উৎস কৃষি।

চরের পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়া কন্যা সন্তাানদের বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হচ্ছে। বাল্য বিবাহ, অপুষ্টিসহ নান করণে প্রতিবন্দী মানুষ বেড়েই চলছে। বর্তমানে জেলায় ৯১ হাজার ৬৭২জন প্রতিবন্ধী রয়েছে। দরিদ্র্য সূচকে দেশের সবোর্চ্চ অবস্থান এই জেলার।

সূত্র আরো জানায়, কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে ভারতের প্রায় ১৪টি নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া আরোও দুটি আন্ত সীমান্ত নদী এ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পানি বহনকারী বিপুলা ব্রহ্মপুত্র নদও কুড়িগ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যারফলে কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলা বন্যা চলাকালীন সময়ে ৩-৪ বার বন্যায় আক্রান্ত হয়। এ বছর জেলার নদী তীরবর্তী ৪১ ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী দেশে ১৮ বছরের কমবয়সী মেয়েদের বিয়ের হার ৬৬ শতাংশ। কুড়িগ্রামে এ চিত্র আরও ভয়াবহ। অর্থাৎ প্রায় ৭৮ শতাংশ। কুড়িগ্রাম জেলায় মোট প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৯১ হাজার ৬৭২ জন, অসচেতনতা, বাল্যবিবাহ গর্ভবর্তী মায়ের পুষ্টির অভাব, প্রসবকালীন জটিলতা, প্রসবকালীন সময়ে প্রত্যন্ত চরাঞ্চল হতে যথাসময়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন না হতে পারার কারণে অদক্ষ ধাত্রীর মাধ্যমে অনিরাপদ ডেলিভারি, দারিদ্রতা ও সামাজিক কুসংস্কার প্রতিবন্ধিতার অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হয়েছে।

সংশিলিষ্টরা বলছেন, কুড়িগ্রাম জেলার ১ হাজার ২৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে চরাঞ্চলে ১৬৯টি বিদ্যালয় রয়েছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই বললেই চলে। অথচ চরাঞ্চলের মানুষের শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রতিটি চরে কমপক্ষে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকা অপরিহার্য। পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকার কারণে সবচেয়ে বেশি শিক্ষাবঞ্চিত শিশুর সংখ্যা ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার দুর্গম চরাঞ্চল গুলোয়। এ কারণে চর এলাকার ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার হতে পারে না।