কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ২৫ নভেম্বর ২০২৪ , ৫:৩১ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে একই ব্যক্তির নামে পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ নিধন, সরকারি ঘর দেয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ, জমি বন্ধক দেয়ার নামেও টাকা আত্মসাৎ ও মারপিট ও চাঁদা দাবিসহ একাধিক অভিযোগ পাওয়ার গেছে। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম শফিউজ্জামান তপন (৪৪)। তিনি রাজারহাট উপজেলার ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশাম চায়না বাজার এলাকার মনির উদ্দিন সরকারে ছেলে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি শফিউজ্জামান তপন ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নানা অপকর্ম করে আসছে। এরই মধ্যে উপজেলার ঘরিয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের দেবদত্ত গ্রামের আলতাফ হোসেন নামের এক মৎস্যচাষীর পুকুরে চলতি মাসের ১ তারিখ বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৮ লাখ টাকার মাছ নিধন করারও অভিযোগ শফিউজ্জামান তপনের বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগী মৎস্যচাষী অভিযুক্তের বিচারের দাবিতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়াও ওই ইউনিয়নের একই এলাকার মফিজন বেগমকে সরকারি ঘরের বরাদ্দ নিয়ে দেয়ার কথা বলে প্রায় ১৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগী ওই নারী ঘর না পেলে টাকা চাইতে গেলে তাকেও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। নিজের পাওয়া টাকা ফেরত পেতে তিনিও গত মাসের ২৩ তারিখ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শুধু তাই নয় একই ইউনিয়নের পশ্চিম দেবত্তর এলাকার ছয়ফুল সরকারের স্ত্রী শিউলি বেগমের কাছে জমি বন্ধক রাখার কথা বলে স্টাম্পে স্বাক্ষর করে ২ লাখ টাকা নেন অভিযুক্ত শফিউজ্জামান। পরে জমি না পেয়ে পাওয়া টাকা চাইতে গেলে তাদেরকেও টাকা দিবে না বলে হুমকি দেয়া হয়। ভুক্তভোগী এ পরিবারটিও গত দুইমাস আগে টাকা ফেরত পেতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অন্যদিকে একই ইউনিয়নের চেতনা এলাকার ব্যবসায়ী এরশাদ আলীর কাছে চাঁদা না পেয়ে গত অক্টোবর মাসের ১২ তারিখ তাকেও মারপিট করা হয়। পরে ওই ব্যবসায়ী প্রাণে বাঁচতে একটি চায়ের দোকানে গিয়ে আশ্রয় নিয়ে বেঁচে যান। পরে ভুক্তভোগী এরশাদ আলীও মারপিট ও চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে সফিউজ্জামানের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শফিউজ্জামান তপনের বিরুদ্ধে এতো সব অভিযোগ থাকার পরেও এখন পর্যন্ত থানায় একটি মামলাও রেকর্ড হয়নি বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, শফিউজ্জামান তপন অসংখ্য মানুষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে হয়রানি করে আসছেন। তার ভয়ে এলাকাবাসী মুখ খুলছেন না। তার কাছে সবাই অসহায় হয়ে পড়েছেন।
ভুক্তভোগী মৎস্যচাষী আলতাফ হোসেন বলেন, শফিউজ্জামান তপন আমার পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৮ লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলেছে। আমি থানায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি। একাধিক বার পুলিশ এলাকায় আসলেও মামলা রেকর্ড হয়নি। হয়তো তার পিছনে অদৃশ্য শক্তি রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শফিউজ্জামান তপন বলেন, আমার মানসম্মান ডুবাইতে আলতাফ হোসেন বিভিন্ন লোক দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। যারা অভিযোগ করেছে সবাই তার নিজস্ব লোক। এলাকায় খোঁজ নিলে সত্যটা জানতে পারবেন।
সার্বিক বিষয়ে রাজারহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো রয়েছে তা তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়াও আলতাফ হোসেন নামের যে ব্যক্তির পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করা হয়েছে, তা ঠিক। তবে কে-বা কাহারা বিষ দিয়েছে এখনো আইডেন্টিফাই করতে পারছি না আমরা।