কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ২৯ জুন ২০২৫ , ৩:২৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে পাথর বোঝাই ট্রাকের ভারে মেয়াদোত্তীর্ণ সোনাহাট সেতুর পাটাতন ভেঙে সকল ধরণের যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
রোববার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সোনাহাট স্থলবন্দর থেকে পাথর বোঝাই একটি ট্রাক সেতুর মাঝামাঝি এসে স্টিলের অংশে পাটাতন ভেঙে আটকে যায়। এতে সেতুতে সব ধরণের যান বাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ অফিসগামী লোকজন মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েন। সেতুর দুপাশে যানবাহনের লম্বা সারি দেখা গেছে। জরুরী প্রয়োজন সারতে লোকজনকে নৌকায় পারাপার হতে দেখা গেছে।
সেতুটি দীর্ঘদিনের পুরনো ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এমনিতেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। এরই মধ্যেই মাঝে মধ্যে সেতুটির পাটাতন দেবে ও ভেঙে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ভোগান্তিতে পড়ে স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পাটাতন ভেঙে গেছে, লোহার পাতি খুলে গেছে এবং সেতুর লাল অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবুও জীবন জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন।
স্থানীয়রা বলছে, ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘদিন পর এরশাদ সরকারের আমলে সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারী দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সাথে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, রাজিমুল ও সোহেল রানা জানান, পরীক্ষার হলে সাড়ে নয়টার মধ্যে প্রবেশ করতে হয়। রিজার্ভ অটোনিয়ে এসে দেখি ব্রীজ বন্ধ। বাধ্য হয়ে পায়ে হেটে পথ চলা শুরু করেছি।
অটো চালক বাবুল জানান, চর ভূরুঙ্গামারীর নতুন হাট থেকে ৮ জন যাত্রী রিজার্ভ নিয়ে কুড়িগ্রাম যাওয়ার জন্য এসেছি। এসে দেখি সেতুতে ট্রাক আটকা পড়েছে। কোন যানবাহন চলছে না। তাই যাত্রী গুলো নেমে গেছে। আজ অটো ভারার টাকা আয় করা সম্ভব হবে না।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত পাথর বোঝাই একটি ট্রাকের কারণে সেতুর পাটাতন ভেঙে গেছে। মেরামতের কাজ করে খুব দ্রুত যানচলাচল জন্য স্বাভাবিক হবে।