সারাদেশ

গঙ্গাচড়ায় ভেঙ্গে গেছে শেখ হাসিনা সেতুর কার্পেটিং, ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ

  রংপুর ব্যুরো ২৩ জুন ২০২৪ , ১:৫৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

Exif_JPEG_420

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ভারী যানবাহন চলাচলে তিস্তা নদীর শেখ হাসিনা সেতুর কার্পেটিং ভেঙ্গে গেছে। এতে করে সেতুর উপর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়েই সেতুর উপর দিয়ে যানচলাচল করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে লালমনিরহাট থেকে রংপুরগামী সকল ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সেতু সংস্কারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ঢাকা থেকে একটি প্রতিনিধি দল আসছে।

জানা যায়, লালমনিরহাট থেকে রংপুরের মানুষের যোগাযোগের সুবিধার্থে ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিস্তা নদীর উপর ‘শেখ হাসিনা সেতু’ এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগি সড়ক না থাকায় লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার রুদ্রেশ্বর এলাকায় বাস, ট্রাক চলাচলে প্রতিবন্ধতা তৈরীতে লোহার খুঁটি স্থাপন করা হয়। কয়েক বছর এভাবে চলার পর পরিবহন মালিকদের চাপে রুদ্রেশ্বরের সড়ক থেকে লোহার খুঁটি তুলে নেওয়া হয়। এতে করে দেড় বছর ধরে শেখ হাসিনা সেতুর উপর দিয়ে লালমনিরহাট থেকে রংপুরগামী বাসসহ পাথরবাহী ট্রাক চলাচল করছে। ফলে লালমনিরহাটের কাকিনা থেকে রংপুরের বুড়িরহাটের সড়কে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় শেখ হাসিনা সেতু এলাকার আশেপাশের সড়ক ধসে যায়।

শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে যান চলাচলের সময় শেখ হাসিনা সেতুর উত্তর পাশের প্রায় ৭ ফুট কার্পেটিং ভেঙ্গে যায়। এতে করে প্রতিদিন লালমনিরহাট থেকে রংপুরে চিকিৎসাসহ অন্যান্য কাজে আসা প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতুর উপর কার্পেটিং ভেঙ্গে যাওয়ার পরও লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলাসহ বুড়িমারী স্থলবন্দরের শত শত ট্রাক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছিল। খবর পেয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সাথে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে শনিবার থেকে সেতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক ও লালমনিরহাট পুলিশ সুপারকে চিঠি দেন। শেখ হাসিনা সেতু মেরামতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শনিবার সেতু পরিদর্শন করে গেছেন। কার্পেটিং ভেঙ্গে যাওয়া স্থানে সর্তকতার জন্য লাল পতাকা টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে সেতুর কার্পেটিং ভেঙ্গে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন চলাচলকারীরা।

রংপুর শহর থেকে ঘুরতে আসা মমিনুল ইসলাম বলেন, সেতুর বয়স ৭ বছর। এর মধ্যে কার্পেটিং ভেঙ্গে যাওয়া ও স্প্যানের বেশ কয়েকটি স্থানে ঢালাইয়ের অংশ উঠে গেছে। দ্রুত জনগুরুত্বপূর্ণ এ সেতু সংস্কারের দাবী জানাচ্ছি। না হলে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

মহিপুর এলাকার মজমুল হক বলেন, এ সেতুর কার্পেটিং ভেঙ্গে গেছে, সেতুর উপর স্থাপিত লাইটগুলোও রাতে ভালভাবে জ্বলে না। তিস্তা নদীর উপর প্রধানমন্ত্রীর নামে এ সেতুর প্রতি কর্তৃপক্ষের অনেক অবহেলা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, সেতুর কার্পেটিং ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এলজিইডি’র একটি দল খুব দ্রুতই সেতু সংস্কারে আসবেন। বর্তমানে সেতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। যেহেতু রংপুর ও লালমনিহাট জেলার মানুষ এ সেতু ব্যবহার করেন, তাই দুই জেলার সাথে সমন্বয়ের জন্য বিভাগীয় কমিশনার স্যার বিষয়টি দেখছেন।

রংপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান আলী বলেন, সেতুর ওয়ারিং কোর্স উঠে গেছে। দ্রুত সেটি মেরামত করা হবে। মূল ব্রীজের কোন ক্ষতি হয়নি।