বিবিধ

চিলমারীতে নদী ভাঙনে হুমকিরমুখে ৬৫০টি পরিবার : ক্ষতির সম্ভবনা ৩০ কোটি টাকার সাবমেরিন ক্যাবল

  uadmin ১৭ আগস্ট ২০২৩ , ২:২৩ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন হচ্ছে চিলমারীর শাখাহাতি, কড়াইবড়িশালসহ বেশকিছু এলাকা। বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর, বিদ্যুতিক খুঁটি, হুমকির মুখে ৬৫০টি পরিবার। সেই সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন সাবমেরিন ক্যাবলের। অন্ধকারে শাখাহাত, বলমৈনদিয়ার খাতা, তেলিপাড়া, চুরুয়া পাড়াসহ প্রায় শতাধিক গ্রাম, বিপাকে প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহক। দেবে গেছে প্রায় ৩শ’ মিটার সংরক্ষণে রাখা সাবমেরিন ক্যাবল।

বিদ্যুৎ বিভাগের সঠিক নজরদারি আর গাফিলতির কারণে ক্ষতির মুখে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারীকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করার লক্ষ্যে উপজেলা সদর থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্রের তলদেশ দিয়ে চিলমারী ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জোড়গাছ বাজার থেকে প্রায় ৫ কি. মি. নদীর তলদেশ দিয়ে ৩ লেনে শাখাহাতি চরে নেয়া হয় ক্যাবল এবং এইচ পোলের মাধ্যমে সংযোগ করে চলাঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহকের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। সেই সময় প্রায় ৩শ’ মিটার ক্যাবল এইচ পোলের পাশে সংরক্ষিত রাখা হয়।

ছবি : উত্তরের আলো
চলতি মৌসুমে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় এইচ পোল ভাঙনের মুখে পড়লে তাৎক্ষণিক এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ইউপি চেয়ারম্যান তা সরিয়ে নেয়। এইচ পোল সরিয়ে নেয়া হলেও সংরক্ষিত রাখা ক্যাবল সরাতে পারেনি।

তবে ক্যাবল উদ্ধারের জন্য এলাকাবাসীসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান চেষ্টা চালিয়ে গেলেও পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত পরিদর্শনে যাননি বা চেষ্টা করছে না বলে জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম। এলাকার মিন্টু, মাইদুলসহ অনেকে বলেন, জীবনে কল্পনা করিনি আমরা চরের মানুষ কারেন্ট (বিদ্যুৎ পামু) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করলো কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের চরম গাফিলতির কারণে ইতিমধ্যে কয়েকটি বিদ্যুৎ খুঁটি নদীতে চলে গেছে এবং সংরক্ষিত সাবমেরিন ক্যাবলগুলো নদী গর্ভে বিলীনের পথে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের বার বার জানিয়েও লাভ হচ্ছে না জানিয়ে চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, সরকার যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করলো আর তা রক্ষার জন্য কোনো উদ্যোগ না নিয়ে যেন তারা ঘুমিয়ে আছেন। তিনি আরও জানান, তাদের সঠিক কোনো সহযোগী না পাওয়ায় স্থানীয়দের নিয়ে ক্যাবল উদ্ধারের চেষ্টা করছি, যেনে শুনে তো সরকারের এত টাকা ক্ষতি হতে দিতে পারি না। এদিকে ক্যাবল উদ্ধার না হওয়ায় গত দুইদিন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। তবে সাবমেরিন ক্যাবল উদ্ধার করা না গেলে চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।

সেইসঙ্গে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করে পল্লী বিদ্যুৎ চিলমারী জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার ওয়াজেদুল ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি তবে জনবল সংকট তা স্বীকার করেন। কোনো মন্তব্য না করেই কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চিলমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়ে জিএম সাহেবের সঙ্গে কথা বলেন। কথা হলে জেনারেল ম্যানেজার মো. মহিতুল ইসলাম জানান, আমাদের লোকজন সেখানে কাজ করছে এবং সেখানে থাকার কথা জানিয়ে বলেন, ওখানের সবকিছু এখনো আমাকে জানায়নি ডিজিএম। তবে দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন জেনারেল ম্যানেজার। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাফিউল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।