সম্পাদকীয়

চিলমারী-রাজিবপুর ও রৌমারী সেজেছে পলাশের সৌন্দর্যে

  আতিকুর রহমান আতিক ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৭:১১ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

একটা সরল রহস্য রয়েছে রাজনীতির মধ্যে। যোগ্য নেতৃত্ব জনগণের চাহিদা পূরণ করে, ভবিষ্যতের আশা বাঁচিয়ে রাখে। নেতা নির্বাচনে ভুল করলে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ঐ নির্বাচনী এলাকার জনতা চূড়ান্তভাবে হতাশ হয়। একটি নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের মহাকাব্য রচনা করে। সেই মানুষগুলোর জীবন কতটা বদলাবে, সেই অঞ্চলের ইতিহাস কতটা বদলাবে তা নির্ধারণ করে দেয়। কাঙ্ক্ষিত জনপ্রতিনিধি পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে আসেন। যাকে-তাকে ভোট দেওয়ার বিপদটা কেবল লুটপাটের রাজনীতির নয়, গণঅধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার নয়, বিপদটা নাগরিক অস্তিত্বের। দেশের সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত জেলা কুড়িগ্রামে এই সংকট আরও তীব্র। আপনি যেভাবেই ব্যাখ্যা করুন না কেন এটা স্পষ্ট যে যোগ্য নেতার অভাবে মানবসভ্যতার এই মুহূর্তে এসেও কুড়িগ্রাম বাংলাদেশের সবচেয়ে গরীব জেলা, রাজিবপুর বাংলাদেশের চরম দরিদ্র উপজেলা। নেতা যত নিবিড়ভাবে জনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে, জনকল্যাণের পথ তত অগ্রসর হবে, সমাজ বদলের লড়াই তত বেশি তীব্র হবে।

রূপকথার গল্পে যেমন হয়, গোটা চিলমারী-রাজিবপুর-রৌমারীর দিকে তাকালে তেমনটা দেখা যায়, সর্বত্রই শুধু অপ্রাপ্তির হাহাকার। ব্রহ্মপুত্র, জিনজিরাম, সোনাভরি, হলহলিয়ার চরগুলোতে বঞ্চিত গৃহের সারি। নদী ভাঙছে, গরীব মানুষগুলো জীবন্ত কঙ্কালে পরিণত হচ্ছে। যেসব কর্মক্ষম তরুণ-তরুণীর আলোয় সমগ্র চরাচর আলোকিত থাকার কথা তাদের সমস্ত জ্যোতি কৃষ্ণগহ্বরের নিকষ কালো অন্ধকারে পরিণত হচ্ছে। বৃদ্ধ বাবার অভাবের যাঁতাকলে পিষ্ট হবার দীর্ঘশ্বাসে অভিশপ্ত এখানকার বাতাস। বৃদ্ধা মায়ের চোখ থেকে হারিয়ে গেছে শান্তির ঘুম, মুখ থেকে হারিয়ে গেছে আহার। এটাকে জীবন বলে না, শুধুই দাঁতে দাঁত চেপে বেঁচে থাকা। অথচ তিনবেলা পেটপুরে খেয়ে সন্তুষ্ট থাকা মানুষগুলোর জীবন আনন্দময় করা খুব কঠিন ছিলো না, পূর্ববর্তী নেতাদের সেই সময় এবং সক্ষমতাও ছিলো, তারপরও খসড়া খাতার মতো দাগ আর কাটাকুটিতে ভরা রুক্ষ অমার্জিত জীবনই যেন এখানকার মানুষদের বিধির বিধান। তারাই জানেন কতখানি তারা হারিয়েছেন, পাশের ঘরে বাস করা প্রতিবেশীর মতোই অভাব তাদের কতটা আপনজন।

শোষণে জর্জরিত কুড়িগ্রাম-৪ আসনের মরা গাঙে বান আসার দিন ৭ জানুয়ারি ২০২৪। কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুবক, নারীসহ সর্বস্তরের বঞ্চিত মানুষের শেকল ভেঙে মরণ সাগর পাড়ে অমর হবার দিন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন। নির্যাতনে বঞ্চনায় অনাহারে শুকনো খড়ের মতো দাহ্য শক্তিতে ভরপুর মানুষের মনে আগুন জ্বালানোর দিন ৭ জানুয়ারি। মানুষের জীবন তো আর এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না। বদলে যায়। বদলে যাওয়াটা একেক সময় একেক রকম। চিলমারী রাজিবপুর রৌমারী অঞ্চলের মানুষ বদলে যাওয়ার আশায় একেকবার একেকজনকে ভোট দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচন করেছেন। বদল হয়েছে। সেটা নেহাতই বাহ্যিক পরিবর্তন। এবার প্রয়োজন ‘উত্তরণ’। অভাব-অনটনে জর্জরিত কুড়িগ্রাম-৪ আসনের মানুষের জীবন সংগ্রামের আঁধারে বাতিঘর হতে পারেন যে মানুষটি তাঁর নাম বিপ্লব হাসান পলাশ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা রৌমারী রাজিবপুর চিলমারীর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় অপেক্ষাকৃত তরুণ এবং সম্ভাবনাময় এই মানুষটিকে বেছে নিয়েছেন ‘নৌকা মার্কা’র মাঝি হিসেবে। সততা, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে নিরলস সংগ্রাম আর অকল্পনীয় নিষ্ঠার মূর্তরূপ অ্যাডভোকেট বিপ্লব হাসান পলাশ। এই ভাঙাচোরা সময়ে আলোর মশাল জ্বেলে যিনি আলোকিত করবেন এই জনপদকে, খেটে খাওয়া মানুষদের জুলুম-জবরদস্তির হাত থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারবেন, সমাজের চেহারা বদলে দিবেন।

চিলমারী রাজিবপুর রৌমারীর সমাজজীবনে মস্ত বড় ভাঙন ধরেছে। যা ভেঙেছে তা আবার নতুন করে গড়তে হলে আপনি-আমি আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। অযোগ্য দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বে আমাদের অধিকার বেহাত হয়ে গেছে, বাঁচার মতো বেঁচে থাকার অধিকার ফেরত পাওয়ার জন্য কুড়িগ্রাম-৪ আসনের মানুষকে লড়তে হবে। দেশমাতৃকা এবং সংবিধান আমাদের যেসব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেসব সুবিধা আদায় করতে লড়তে হবে। যেসকল সুবিধার কথা আইনে বলা হয় নি, কিন্তু মানুষ ও মানবতার জন্য যা খুব জরুরি প্রয়োজন সেসকল সুবিধার জন্যও আমাদের লড়তে হবে, জোর লড়াই করতে হবে। ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন। দুর্নীতি রুখে দিতে, আপনার অধিকার ফিরিয়ে নিতে, মানবাধিকার ও সুশাসন কায়েম করতে বিপ্লব হাসান পলাশকে নৌকা মার্কায় ভোট দিন। জনগণের উচ্ছ্বাস বিপ্লব হাসান পলাশ। আপনার অধিকারকে আপনিই বাঁচাবেন। সমস্ত শক্তি দিয়ে বাঁচাবেন।


লেখক
আতিকুর রহমান আতিক
সাবেক উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।