uadmin ৩১ অক্টোবর ২০২৩ , ১:৪৩ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট: লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়েতে জনবল সংকট থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ২৭টি রেলস্টেশন। এতে বেড়েছে যাত্রীদের ভোগান্তি। একই সঙ্গে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
সরেজমিন দেখা যায়, ট্রেন চলছে। আছে রেলস্টেশনও। তবে নেই যাত্রাবিরতি। এ চিত্র লালমনিরহাটের রইছবাগ স্টেশনের। স্টেশন ভবনের অবস্থা জরাজীর্ণ। জনবল না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে নেই এর কোনো কার্যক্রম। তাই এ রেলপথের কোনো সুবিধা নিতে পারছেন না যাত্রীরা। অথচ একসময় এ স্টেশন থেকে শত শত যাত্রী লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেনে যাতায়াত করতেন।
কিন্তু এখন ট্রেন না থামায় চলাচল করেন অটোরিকশা, বাসসহ বিভিন্ন গণপরিবহনে। তবে শুধু রইছবাগ নয়, এমন বেহাল রেলরুটের লালমনিরহাটের আদিতমারী, ভোটমারী, বাউড়া, পাটগ্রাম, কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট, উলিপুর, ত্রিমোহনী, রমনা বাজার, দিনাজপুর জেলার মন্মথপুর, কাউগাঁ, গাইবান্ধা জেলার নলডাঙ্গা, ঠাকুরগাঁও জেলার ভোমরাদহ, রংপুর জেলার চৌধুরানী, অন্নদানগর, খোলাহাটি বগুড়া ভেলুরপাড়া, আলতাফনগর, মীরবাগসহ ২৭টি স্টেশনের।
এদিকে অনেক স্টেশনে মাঝেমধ্যে ট্রেন থামলেও বিক্রি হয় না টিকিট। ফলে এখান থেকে ট্রেনে চড়লে টিটিইর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এতে যাত্রীদের পক্ষ থেকে অপদস্থ ও ভোগান্তিতে পড়ার অভিযোগ ওঠে। এমনকি স্টেশনগুলোতে ইচ্ছামতো ট্রেন এসে দাঁড়ায়। আবার যাত্রী নামার পর স্টেশন ছেড়েও যায় আপন গতিতে।
রইছবাগ স্টেশন এলাকার সাহেব আলী (৫৫) জানান, স্টেশনে ট্রেন না থামায় তাদের বাড়তি টাকা দিয়ে অন্য স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে চড়তে হয়। একই এলাকার ছবর উদ্দিন (৬০) জানান, কখনো-সখনো এখানে ট্রেন থামে। তবে টিকিট পাওয়া যায় না। ফলে লালমনিরহাট স্টেশনে গিয়ে নামলে টিটিই ও জিআরপি পুলিশের কাজে অপদস্থ হতে হয়। বাধ্য হয়ে তাই ট্রেন ছেড়ে আসা জায়গা থেকেই গুনতে হয় পুরো ভাড়া।
বাউড়া স্টেশন এলাকার রফিজ মিয়া জানান, রাতে স্টেশনে কোনো বাতির ব্যবস্থা নেই। এমনকি বিশ্রামাগার, টয়লেটসহ স্টেশন মাস্টারের রুম সব সময় তালাবদ্ধ থাকে। নারী যাত্রীদের জন্য আলাদা টয়লেট না থাকায় প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়তে হয়।
লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রেলওয়ের আওতায় ‘বি’ এবং ‘ডি’ ক্লাস মিলে মোট ৮০টি স্টেশন রয়েছে। তবে স্টেশন মাস্টার, পয়েন্টসম্যান, বুকিং সহকারীসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ জটিলতার কারণে দুই শতাধিক জনবল সংকট রয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে ২৭টি স্টেশনের কার্যক্রম। তবে নতুন জনবল নিয়োগ হলে স্টেশনগুলো আবার চালু হবে।