এস এম রাফি ৩ জানুয়ারি ২০২৩ , ৪:৫৩ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান মনির।
বিচারিক (নিম্ন) আদালতে চার দফায় জামিন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর উচ্চ আদালত হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন বিএনপির শীর্ষ এই দুই নেতা।
গতকাল সোমবার (২ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের পক্ষে এ জামিন আবেদন করা হয়।
আসামি পক্ষের অন্যতম জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন গণমাধ্যমের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
গত ২১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ। কিন্তু ওই আদেশের সার্টিফাইট কপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনজীবীর হাতে না পাওয়ায় এতদিন উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করতে পারেননি বিএনপির এ দুই শীর্ষ নেতা।
রবিবার (১ জানুয়ারি) ওই আদেশের সার্টিফাইট কপি হাতে পাওয়ার পর আজ উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করলেন ফখরুল-আব্বাসের আইনজীবী।
গত ৮ ডিসেম্বর দিনগত রাতে নিজ বাসা থেকে ফখরুল ও আব্বাসকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার বিএনপি নেতাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন অনেকে। এ সময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল-ডাল, পানি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া যায় বলে দাবি করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়। পল্টন থানার উপ পরিদর্শক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। তবে এ মামলার এজাহারে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না।
মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ। এদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল জামিনে আছেন।