ইমন হাসান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ৭ মার্চ ২০২৪ , ১০:৫০ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
হাজার নয় মাত্র পাঁচ শত টাকা। ঘুস নেওয়ার সময় ফেঁসে গেলেন ঝিনাইদহ ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ের এমএলএসএস ( অফিস সহায়ক ) লুৎফর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) অভিযান পরিচালনা করে দপ্তরটিতে। এ সময় ঘুষের টাকা সহ হাতে নাতে ধরা পড়ে যায় সে (লুতফর রহমান)। শাস্তি হিসাবে রাঙামাটি জেলায় তৎক্ষনিক বদলি করা হয়েছে তাকে। ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকলেন ড্রাগ সুপার। খবর নিশ্চিত করেছেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় (দুদক) ঝিনাইদহের সহকারি পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায় ঝিনাইদহ ড্রাগ সুপারের কার্যালয়ে দীর্ঘ দিন ধরে ঘুষ বানিজ্য সহ সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানী করা হচ্ছে বলে দুদকে অভিযোগ করা হয়।
বৃস্পতিবার (৭ ফেব্রæয়ারি) ১২ টা থেকে ছদ্মবেশে সহকারি পরিচালক (দুদক) মোঃ আসাদুজ্জামান, সহকারি পরিদর্শক (এআই) কাউছার আহম্মেদ ও এএসআই মহসীন হাসান । ওই দপ্তরে ঔষধ ব্যবসায়ী সেজে অবস্থান নেন। আনুমানিক দুুপুর ১টার দিকে জেলা শহরের এইএসএস সড়কের মেসার্স শাহীন হোমিও হলের মালিক সার্ফুজামান লাইসেন্স গ্রহনের জন্য সেখানে আসেন। এ সময় অভিযুক্ত এমএলএস এস ( অফিস সহায়ক) লুৎফর রহমান ওই ব্যক্তির কাছে ঘুষ দাবি করেন। পাঁচ শত টাকা তার (লুৎফর রহমান) হাতে তুলে দেন ওই ব্যবসায়ী (সার্ফুজামান )। আরো জানানো হয় ছদ্ম বেশে দুদকের টীম টাকা সহ হাতে নাতে ধরে ফেলে তাকে (লুৎফর রহমান )।
এসময় ড্রাগ সুপার নিজ কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বলে দুদক সুত্র নিশ্চিত করেছেন। সুত্র মতে খবর পেয়ে সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঝিনাইদহের উপ-পরিচালক মোঃ শফি উল্লাহ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। ঘুস গ্রহনের অভিযোগে তৎক্ষনিক জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ড্রাগ সুপার সিরাজুম মনিরাকে অনুরোধ করেন তিনি (উপ-পরিচালক দুদক)। বেলা ৩টার দিকে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জব্দ করে দুদক টীম নিজ কার্যালয়ে ফিরে আসেন।
ড্রাগ সুপার সিরাজুম মনিরা অফিস সহায়কের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন ডিজি ( মহা পরিচালক ঔষুধ প্রশাসন) নির্দেশে বিকেলেই (বৃহস্পতিবার) লৎফর রহমানকে রাঙামাটি জেলায় বদলি করা হয়েছে। ১০ ফেব্রæয়ারি মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে তাকে(লুৎফর রহমান)। অভিযুক্ত লুৎফর রহমানের সাথে এই প্রতিবেদকের সাথে সরাসরি কথা হয়েছে। তখন তিনি বলেন সময় নেই এখনই বাড়ি যেতে হবে। কারণ ১০ তারিখে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে।
অন্য একটি সুত্র জানায় ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি ড্রাগ সুপার পদে ঝিনাইদহে যোগদান করেছেন সিরাজুম মনিরা। ওই বছরের মাঝমাঝি সময় স্থানীয় নতুন হাটখোলাতে একটি ঔষুধের দোকানে অভিযান পরিচালনার সময় জনতার রোষানলে পড়েন তিনি। পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সেখান থেকে উদ্ধার করেন তাকে। অভিযোগ উঠেছে নতুন ড্রাগ লাইসেন্স কিংবা নবায়ন করতে মোটা অংকের ঘুষ আদায় করা হয়। একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন লেনদেন ছাড়া ওই দপ্তরে ড্রাগ লাইসেন্স পাওয়া কঠিন। অনেক আগে থেকেই ওই দপ্তর কেন্দ্রিক একটি শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেন তারা ( ভুক্তভোগী)।
সব শেষ পাপের পূর্ণতা পেলো। ২০১৪ সাল থেকে ঝিনাইদহে কর্মরত অফিস সহায়ক লুৎফর রহমান ফেঁসে গেলো! ইতোমধ্যে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ে স্থানীয় দপ্তর (দুদক) থেকে গোপন প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।