রাজনীতি

ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা

  এস এম রাফি ২৪ অক্টোবর ২০২৩ , ৭:৩৭ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

ডেডলাইন ২৮ অক্টোবর। রাজনীতির মাঠে আলোচনা শুধুই দিনটিকে ঘিরে। এদিন ঢাকায় অনুষ্ঠেয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে চলছে সরকারি দলের হুমকি-ধমকি; পাড়া-মহল্লায় পাহারা বসানোর ঘোষণা। এছাড়া বিএনপির এই মহাসমাবেশের বিপরীতে একই দিনে কর্মসূচি দিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণাও দিয়েছে তারা।

তবে সবকিছুকে পেছনে ফেলে সর্বাত্মক প্রস্তুতিতে থেমে নেই বিএনপি। এবার ‘ভিন্ন কৌশল’ নিয়ে এগোতে চায় তারা। মহাসমাবেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। সারাদেশে বাড়ানো হয়েছে সাংগঠনিক তৎপরতা। নেতাকর্মীও বাধা ডিঙিয়ে ঢাকামুখী হতে শুরু করেছেন। যে কোনো মূল্যে কর্মসূচি সফল করতে মরিয়া তারা। নেওয়া হচ্ছে নানা প্রস্তুতি। কেন্দ্র থেকে দেওয়া হচ্ছে নানা দিকনির্দেশনা। চলছে জনতার ঢল নামানোর পরিকল্পনা।

দলটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা বলেছেন, সমাবেশে বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীর ঢল নামাতে চান তারা। ফলে নেতাকর্মী যেন সমাবেশে না আসতে পারেন, সে জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হতে পারে। এমনকি পথে পথে বিএনপি নেতাকর্মীকে পুলিশি হয়রানি বা তাদের ওপর হামলার আশঙ্কাও করছেন তারা। তাই সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলার বিএনপি নেতাকর্মী নানা কৌশলে সড়ক, রেল ও নৌপথে আগেভাগেই ঢাকায় ঢুকছেন। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে ঢাকায় আসছেন তারা।

বগুড়ার গাবতলী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, গাবতলী উপজেলা থেকে শনিবার রাতে শতাধিক নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় গেছেন। এখনও যাচ্ছেন। এ জেলা থেকে ঢাকায় মহাসমাবেশে কমপক্ষে ৩০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন বলে দাবি করছেন নেতারা।

খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী জানান, তারা এরই মধ্যে প্রস্তুতি সভা করেছেন। জেলার ৯টি উপজেলা থেকে প্রায় চার হাজার নেতাকর্মী মহাসমাবেশে যোগ দেবেন। তবে কোনো বাস ভাড়া করে নেতাকর্মী একসঙ্গে ঢাকায় যাবেন না। নেতাকর্মী যে যার মতো সমাবেশের আগে ঢাকায় পৌঁছে যাবেন। সমাবেশের আগের দিন বাস বন্ধ করে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুণ বলেন, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে মেহেরপুর থেকে ইতোমধ্যে বেশিরভাগ নেতাকর্মী ঢাকায় পৌঁছে গেছেন; বিশেষ করে যাদের ঢাকায় থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এর বাইরে আগামী ২৬ তারিখের মধ্যে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ঢাকা পৌঁছে যাবে। সরকার গণপরিবহন বন্ধ রাখলেও যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয়, তাই আগেভাগেই আমরা ঢাকা পৌঁছে যাব।

অন্যদিকে পঞ্চগড় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু বলেন, সমাবেশ সফল করতে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা যেভাবেই হোক সমাবেশে যোগদান করব। ঢাকায় সবাই নিজ নিজ দায়িত্বে থাকবে। এ ছাড়া যুবদল, ছাত্রদলসহ মূল দলেরও ব্যাপক প্রস্তুতি আছে। কিছু কিছু নেতাকর্মী ইতোমধ্যে ঢাকায় চলে গেছে এবং ২৬-২৭ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার নেতাকর্মী পঞ্চগড় থেকে যাওয়ার প্রস্তুতি আছে। যদি ওইদিন গাড়ি বন্ধ থাকে তবে আমরা যে পর্যন্ত যাবে, সেখানেই অবস্থান নিয়ে সমাবেশ শুনব।

সমাবেশ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, রাজশাহী থেকে ঢাকায় বিএনপির যেসব নেতাকর্মী মহাসবাবেশে যাবেন তাদের চার ভাগের এক ভাগ ইতোমধ্যে ঢাকায় পৌঁছে গেছেন। বুধবারের (২৫ অক্টোবর) মধ্যে অধিকাংশ নেতাকর্মী বাস ও ট্রেনে ঢাকায় পৌঁছাবেন। যাদের জরুরি কাজ আছে কেবল তারাই ২৭ তারিখে ঢাকায় যাবেন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের অধিকাংশ ট্রেন ও লোকাল বাসে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ঢাকায় যাওয়া নিয়ে যানবাহনকেন্দ্রিক কোনো সমস্যা হয়নি।