এস এম রাফি ৪ অক্টোবর ২০২৩ , ৫:৩৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
উজানে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণের কারণে হুহু করে তিস্তায় পানি বাড়ছে। যেকোনো মূহর্তে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ কারণে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জল কপাট খুলে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।পাউবো সুত্রে জানা গেছে, সিকিমের চুংথাং হ্রদ বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় গজলডোবা, দোমোহনী, মেখলিগঞ্জ এবং ঘিশ নদীতে আকস্মিক ভাবে পানি বাড়তে শুরু করে। গজলডোবার উজানে দোমোহনী নদীতে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দোমোহনী হয়ে তিস্তায় পানি প্রবেশ করছে।
পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী,টেপাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, খালিশা চাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রাম এবং জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, গোলমুন্ডা, শোলমারী ইউনিয়নের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত হওয়ার ফলে প্রায় ১ হাজার ৫’শ পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মোবারক আলী জানান, সকালবেলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এমনভাবে পানি বাড়ছে যা বলার বাহিরে। মূহর্তের মধ্যে চরের ধান ক্ষেত তলিয়ে গেল।
একই গ্রামের বাসিন্দা সুমন মিয়া জানান, সকালের দিকে চরে গরু বেধে আসলাম আশার ঘন্টাখানেক পরেই এতো পানি বৃদ্ধি পেলো চর গুলো চোখের পলকে পানি বন্দি হয়ে গেলো।
ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক জানান, একদিকে উজানের ঢল, অন্যদিকে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। উত্তর খড়িবাড়ী গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, উজানে বাঁধ ভাঙার কারণে দোমোহনী হয়ে তিস্তায় পানি প্রবেশ করছে সেজন্য তিস্তায় যেকোনো সময় বিপৎসিমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। দুপুর ১২ টায় পানির লেভেল ছিল ৫১ মিটার দশমিক ৩৯ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসিমার ৭৬ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হয়েছিল। আর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিকেল তিনটায় ৫২ মিটার দশমিক ৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসিমার ৭ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকাল থেকেই সতর্কতা জারি করে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। বন্যা কবলিত দুর্গত এলাকা পরিদর্শনও করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো ধরণের ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।