জহির রায়হান, কাউনিয়া ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৭:১২ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তার চরে এবার নতুন আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে আগাম আলুর প্রত্যাশিত দামের চেয়ে বেশী দাম পাওয়ায় কৃষকরা বেজায় খুশি। চলতি মৌসুমে আলুর দাম বেশি থাকায় চাষিরা বেশী লাভবান হচ্ছেন।
সরেজমিনে কাউনিয়ার তিস্তার চর সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নতুন আলু তোলার ধুম পড়েছে। তিস্তা নদীর নিজপাড়া অংশে ১০নম্বর ঘাট এলাকায় আগাম আলু ক্রয় করার জন্য ফরিয়া ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। কৃষকরা চরের জমি থেকে আলু তুলে এনে নদীর পানিতে ধুয়ে প্রতি কেজি ৫৫ টাকা দরে তাদের কাছে বিক্রি করছেন।
আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে ও হাটবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি মণ নতুন আলু ২২০০ টাকা থেকে ২২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৯৭৫ হেক্টর। ইতোমধ্যে অর্জন হয়েছে ৫হাজার ১৬ হেক্টর জমিতে। আগাম জাতের আলু উত্তলন হয়েছে প্রায় ১২৫ হেক্টর জমি থেকে। উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৬টি উনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বিশেষ করে তিস্তা নদীর জেগে উঠা চরে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে বেশী।
কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে, আশ্বিন মাসের ১ম সপ্তাহ থেকে ৩য় সপ্তাহ পর্যন্ত এ আলু বীজ রোপণ করা হয়। আলুর জমি পরিচর্যা শেষে ৬০-৭০ দিন পর আলু তুলে বিক্রি শুরু হয়। নতুন আলুর চাহিদাও বেশ ভালো থাকে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আলু উৎপাদনের খরচ বেড়েছে অনেক বেশি। এবার আলুর ফলন এবার একটু কম। তবে ভালো দাম পাওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না তাদের। পাইকাররা জমিতে থেকে আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ঢুসমারা চরের আগাম আলু চাষি নায়েব আলী জানান, চলতি মৌসুমে আলু বীজ, রাসায়নিক সার, কীটনাশক, মজুরি, সেচ সবকিছু মিলিয়ে আলু উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। একই কথা জানালেন আলু চাষি লস্কর, হাকিম ও আবেদ আলী। তবে তারা বর্তমান বাজার মূল্য পাওয়ায় খুশি।
আলু ক্রেতা শাহিন আকন্দ ও ফজল হক জানান, তারা চরের কৃষকের কাছ থেকে কিনে গাইবান্দা, নাগেরহাট সহ বিভিন্ন জেলায় পাঠান। তারা প্রতি কেজিতে ৫০ পয়সা থেকে ১টাকা করে লাভ করেন। আজ সোমবার তারা দুজনে মিলে ৫৫টাকা দরে কার্ডিনাল জাতের ১০টন আলু ক্রয় করেছেন। কাউনিয়া থেকে আলু বিভিন্ন জেলায় যাওয়ায় আলু উত্তলন শ্রমিক, পরিবহনে ঘোড়াগাড়ী ও মটরগাড়ী শ্রমিক, ওজন করা ও বস্তা প্যাক করা শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন জানান, আগাম জাতের আলু চাষ করে বাম্পার ফলন হয়েছে, জিনিসপত্রের দাম বেশি, উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কিন্তু চলতি মৌসুমে কৃষকরা আগাম আলুর দামও ভালো পাচ্ছেন। এবার আলুতে লোকসান হবে না আশা করছি। দাম ভালো পাওয়ায় আগাম জাতের আলুতে কৃষককে লোকসানের মুখে পড়তে হয় না। এবং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী জমিতে আলু চাষ হবে।