uadmin ১৭ অক্টোবর ২০২৩ , ৯:৫২ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
নয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবণের সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনদের। সংস্কারের করতে গিয়ে বিভিন্ন কক্ষ ভেঙে ফেলা হয়েছে।
কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার এই কাজে ধীরগতিসহ রয়েছে অনিয়মসহ নিম্নমানের প্রয়োজনীয় সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ। কাজের মান নিয়ে কথা বললেও কর্ণপাত করেননি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা দাবী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার। তবে ঠিকাদার অসুস্থ্য থাকায় কাজে ধীরগতি হয়েছিল মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের আওতায় ৫০শয্যা বিশিষ্ট চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন সংস্কার কাজের আদেশ দেয়া হয় ২০২২ সালের ১ আগষ্টে। হাসপাতাল সংস্কারে পুরাতন ভবনের সকল বাথরুম, সম্পুর্ন ভবনের ফ্লোরসহ ৩ফুট ওয়াল টাইল্স লাগানো, ফিটিংস, ইলেকট্রিক ওয়ারিং, দরজা জানালা (গ্রিল ও থাই) লাগানো, দ্বিতল বিশিষ্ট ১টি গ্যারেজ নির্মাণ, ৪টি বাসভবন সংস্কার, হাসপাতালের ভিতরের রাস্তা ও বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ কাজের জন্য রংপুরস্থ মেসার্স চমক ট্রেডার্সের সাথে কাজের চুক্তি হয় ১ কোটি ৭৯ লক্ষ ৩৭ হাজার ৪০৫ টাকা। কার্যাদেশ থেকে ৯মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ঠিকাদারের লোকজন বিগত ১৫ মাসেও কাজ শেষ না করে বরং বিভিন্ন জায়গা এলোমেলো করে রেখেছে। এতে হাসপাতালটির স্বাস্থ্য সেবাসহ দাপ্তরিক কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে হাসপাতালতো নয় যেন পরিত্যাক্ত কোন ভবন। গত ১৫ মাসে মাঝে মধ্যে কাজ করলেও সকল কাজই করা হয় নিম্নমাণের সামগ্রী দিয়ে বলে রোগী ও স্থানীয়রা জানায়।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতাল ভবনের সামনে খোলা ড্রেন ও মাঠে পানি জমা। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বসার কক্ষ ভেঙে ফেলায় অস্থায়ীভাবে ছোট ছোট কক্ষে অফিস করায় বিভিন্ন সেবা গ্রহিতা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের সামনে রাখা হয়েছে ভবনের ভেঙে ফেলা প্লাস্টার ও বিভিন্ন ময়লা। এতে দুষিত হচ্ছে হাসপাতালটির পরিবেশ। জানালায় থাই গ্লাসের পরিবর্তে লাগানো হয়েছে নিম্নমানের গ্লাস, রং, টাইল্স লাগানোর কাজে অনিয়ম, রাস্তার সিসি ঢালাইয়ের দু’মাস না যেতেই বেরিয়েছে রড, বিভিন্ন ওয়াল প্লাষ্টার করা হয়েছে দায়সাড়াভাবে। দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ধির গতিতে সংস্কার কাজ চলতে থাকলেও গত ২-৩ সপ্তাহ ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে।
হালপাতালে ভর্তি থাকা রোগী নয়ারহাট এলাকা থেকে আসা স্বাধীন আহমেদ, রমনা রেল স্টেশন এলাকা থেকে আসা রফিয়াল হক, শরীফেরহাট এলাকা থেকে আসা শামসুল হকসহ অনেকে জানান, এক বছরের বেশী সময় ধরে মেরামতের কাজ চলতে থাকায় হাসপাতালের যে অবস্থা এখানে রোগী আসলে আরও বেশী অসুস্থ হয়ে যাবে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সোহেল নামের এক ব্যক্তির সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ কুড়িগ্রামের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুজ্জামান বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করানোর চেষ্টা করেছি। ঠিকাদার অসুস্থ্য থাকায় কাজে ধিরগতি ছিল, কাজ শুরু হবে, আর থামবে না। এক মাসের মধ্যে কাজ তুলে দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, আগামীকাল বুধবার হাসপাতালে আসবো। কিছু জানার থাকলে তখন জানবেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের সংস্কার কাজের ধিরগতি ও মান খারাপের কথা বললেও কোন কাজ হচ্ছে না। ঠিকাদার আমাদের কথায় কর্ণপাত করেন না।