arifulweb ২২ ডিসেম্বর ২০২২ , ১২:৫১ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নির্বাচনে যতটুকু স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হয়েছে, সেটা কিন্তু আমাদের (আওয়ামী লীগ) আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল।’ আজ শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি আমলের নির্বাচনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি যখন জামায়াতকে নিয়ে সরকার গঠন করে, তারপর থেকে দেশে হত্যা, খুন, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিংসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। ২০০১ সালের নির্বাচন অথবা মাগুরা, মিরপুর বা ঢাকা-১০-এর উপনির্বাচনের কথা যদি কেউ স্মরণ করে, তাহলে বিএনপির আমলে নির্বাচনের নামে কী হতো, সেটা ওইটুকুই যথেষ্ট, যদি দেখেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কথাই ছিল ১০টা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। ভোটের বাক্সে সিল মারা থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম হতো। তার জন্য আমরা স্বচ্ছ ভোটার বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা…। কারণ ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে তালিকা করেছিল ২০০৬-এ নির্বাচন করতে বিএনপি। অবশ্য তাদের মুখে এখন খুব গণতন্ত্রের কথা শোনা যায়। তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে প্রকৃত গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক অধিকার এ দেশের মানুষের ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু করি।’
আওয়ামী লীগের সময় অন্য দলগুলোর রাজনীতি করার সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সময়ে সব দলই কিন্তু তাদের দল করার সুযোগ পাচ্ছে। সেই ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি।’
বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল মন্তব্য করে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে সমাদৃত। খালি চোখে দেখে না আমাদের দেশের কিছু মানুষ। তাদের কিছুই ভালো লাগে না। গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে তাদের ভালো লাগবে না, তাদের ভালো লাগে ওই অগণতান্ত্রিক কিছু হলে তাদের মূল্য বাড়ে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনের পর একটানা গণতান্ত্রিক ধারা আছে বলেই তো বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বে আবার সেই মর্যাদা পেয়েছে।’
দেশের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক সমালোচনা এটা-সেটা শুনতে হয়। তো এত কষ্ট করে দিনরাত পরিশ্রম করে কাজ করে আজকে বাংলাদেশকে যে জায়গাটাতে নিয়ে এসেছি, বাইরের লোকেরা দেখে। কিন্তু আমাদের দেশের ভেতরের কিছু লোক জীবনেও দেখে না। তারা দেখবে না। তারা হয়তো জানি না অন্যরকম সরকার থাকলে তাদের অনেক সুবিধা থাকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের কল্যাণটাই হচ্ছে আমাদের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশে ২০০৮-এর নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর একটানা ২০২২ পর্যন্ত এ দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই কিন্তু আজকে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। না হলে এত উন্নতি হতো না। আমরা খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই যথেষ্ট সাফল্য আনতে পেরেছি।’
রিজার্ভ নিয়ে সমালোচকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হঠাৎ করে কেউ কেউ পারদর্শী হয়েছে, রিজার্ভ নিয়ে অনেক কথা শোনা যাচ্ছে। করোনাকালে আমাদের আমদানি হয়নি, কেউ বিদেশে যেতে পারেনি, কোনো রকম খরচ ছিল না। সবচেয়ে বড় কথা প্রবাসে যারা…যেহেতু কেউ বিদেশে যেতে পারেনি, হুন্ডি ব্যবসাও ছিল না, একেবারে সরকারিভাবে সব টাকা এসেছে, যার ফলে আমাদের ভালো ফান্ড আসে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানে বিএনপির আমলে ’৯১ থেকে ’৯৬ পর্যন্ত বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন রিজার্ভ রেখে গিয়েছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। যেটা তিন মাসের খাবার আমদানি করারও পয়সা হতো না।’