সারাদেশ

পটুয়াখালীতে মহাসড়ক যেন ময়লার ভাগাড়

  রাকিবুল ইসলাম তনু, পটুয়াখালী ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ , ৮:১১ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

পটুয়াখালী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৮৯২ সালে। ১৩১ বছর পার হলেও ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা ঠিক করতে পারেনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। মহাসড়কের পাশে খোলা জায়গায় ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। এতে দুর্গন্ধে দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে নদীর পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছিল পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এসব ময়লা জোয়ারের পানিতে ভেসে যেতো নদীতে। ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনা ফেলতে বাধা দেয় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। এরপর থেকে পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের পাশে পটুয়াখালী টোলপ্লাজার পূর্ব পাশের সড়কের খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা হলে সেখানে সমস্যা হওয়ার পরে সেখান থেকে সরিয়ে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের গরুর বাধঘাট নামক এলাকায় ফেলা হতো ময়লা।

মাসখানেক ধরে পৌর শহরের সমস্ত ময়লা এনে জমা করা হয় পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের বাধঘাট তেলের পাম্পের পাশেই এতে পুরো সড়ক ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মহাসড়কের পথচারীরা ওই এলাকার মানুষজন।

ময়লার ভাগাড় থেকে বাতাসে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব। সড়কটিতে চলাচলকারী সবাই নাক চেপে চলাচল করছে। এক হাতে নাক চেপে আর এক হাত দিয়ে মোটরসাইকেল চালাতে দেখা গেছে। এতে দূর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। সরেজমিনে এ ময়লার ভাগাড় দেখতে গেলে প্রতিবেদকের সামনের এক মোটরসাইকেল চালককে এক্সিডেন্ট করতে দেখা গিয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চান স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে রাতের আঁধারে এসে এখানে ময়লা ফেলে যাচ্ছে পৌর কতৃপক্ষ। ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে এ বিষয়ে অবহিত করলে তিনি দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘শহরের অনেক সড়ক প্রশস্ত ও চার লেনের হয়েছে। দুটি লেক, ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন ও দৃষ্টিনন্দন সড়ক বাতি যে কাউকেই আকৃষ্ট করবে। তবে ময়লার ভাগাড়টি সব উন্নয়নকে ফিকে করে দিচ্ছে।’

রিকশাচালক রাশেদ বলেন, এই রাস্তায় দুর্গন্ধের লইগ্যা চলন যায়না। না ঠ্যাকলে এই দিক আই না।

পথচারী রিয়াজ বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে আমাদের চলাচল করতে হয়। ময়লার দুর্গন্ধে শ্বাস নিতে পারি না। এভাবে রাস্তার পাশে ময়লা ফেলে রাখা ঠিক না। এতে যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় তেমনি ক্ষতি হয় পরিবেশের। আমরা দ্রুত এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।

মহাসড়কের পাশের এক দোকানী মোঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, এখানে ময়লা ফেলতে দেখে জিজ্ঞেস করছিলাম কেনো এখানে ময়লা ফেলছে? তখন পরিচ্ছন্নকর্মীরা বলেছিলো কয়েকদিনের মধ্যে ময়লা সড়ানো হবে। এখানে বালি ফেলা হবে। আর ময়লা ফেলবে না। কিন্তু প্রতিনিয়ত রাতে আঁধারে এসে ময়লা ফেলে যাচ্ছে তারা। প্রতিদিন এই দুর্গন্ধে থাকতে থাকতে মনে হচ্ছে ডোবার মধ্যে বাস করছি।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকেই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আমরা এখানে বালি ফেলে ভরাট করে দেবো। ডাম্পিং স্টেশনে এরপর থেকে ময়লা চলে যাবে। যায়গাটা তৈরী হচ্ছে আর দুই-তিন দিন সময় লাগবে৷ এখন পর্যন্ত এলোমেলো ভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে তবে আর কিছুদিনের মধ্যে সমস্ত যায়গা পরিষ্কার করে আমরা সব ময়লা ডাম্পিং স্টেশনে ফেলার ব্যবস্থা করবো।