সারাদেশ

পদ্মাসেতু থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজের ৩ মাস পরে থানায় হাজির সেই রিক্সাচালক

  এস এম রাফি ১ অক্টোবর ২০২৩ , ৯:৪৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

চলতি বছর গত ১৮জুন মাসে গভীর রাতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ব্যাটারিচালিত রিক্সা নিয়ে পদ্মাসেতুতে উঠে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজের তিন মাস পর স্ব-শরীরে থানায় হাজির সেই রিক্সাচালক শরীফুল। নিখোঁজের কয়েকদিন উদ্ধার কাজ চললে সে সময় খোঁজ মেলেনি এই রিক্সাচালকের। ৩ মাস ১০দিনের মাথা অবশেষে খোঁজ মিলেছে সে চালকের, বেঁচে আছেন তিনি। তার নাম শরিফুল ইসলাম ।

রবিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে স্ব-শরীরের পদ্মাসেতু উত্তর থানায় উপস্থিত হয়েছেন তিনি।

মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুমন দেব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শরিফুল বাগেরহাটের মোল্লাহাট গ্রামের জিন্নাত আলীর ছেলে।

শরিফুল জানান, তার বাড়ি বাগেরহাটে তবে তিনি ঢাকার হাজারীবাগে থেকে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন । ঘটনার দিন রাতে পারিবারিক কলহের জেরে বাড়ি থেকে সে বের হয়। তার উদ্দেশ্য ছিল সে ঢাকা থেকে বাগেরহাটের গ্রামে চলে যাবে। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত হয়ে সে রিকশা চালিয়ে পদ্মা সেতৃর সেতুর উপরে ওঠে। এক পর্যায়ে একটি গাড়ির সাথে হালকা ধাক্কা লাগলে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধাওয়া করে। এসময় গুলি করে দিবে এই ভয়ে সে রিকশা রেখেই সেতু থেকে ঝাঁপিয়ে নদীতে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, রাতভর নদীতে ভেসেছিলাম। নদীতে অনেক ঢেউ ছিল। আমি কোন কুল-কিনারা খুঁজে পাইনি। নিজের মতো করে সাঁতার কাটছিলাম। সকালে দূরের একটি এলাকায় উঠি । পরবর্তীতে বাসে উঠে বাড়িতে গেলেও পরিবারের কেউ আমার এই ঘটনা বিশ্বাস করেনি। সবাই বলছিল অটোরিকশাটি আমি চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছি ।

কিস্তির টাকা দিয়ে ব্যাটারি চালিত রিকশাটি কিনেছিলাম। পরবর্তীতে জানতে পারি এটি থানায় আছে । এজন্য পদ্মা সেতু উত্তর থানায় আসি। বাড়ির লোকজন মনে করেছে যে আমি এটি বিক্রি করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে শরিফুল ইসলামের শশুর মোহাম্মদ দাউদ মোল্লাহ জানান, ঘটনাটি আমাদের কাছে বলার পর আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি কারণ, পদ্মা নদীতে পড়ে কেউ জীবিত ফিরতে পারেনা। শরিফুলের মানসিকভাবে কিছু সমস্যা ছিলো। এখন থানায় এসে দেখলাম তারই রিকশাটি। এখন বিশ্বাস হচ্ছে।

এবিষয়ে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অর্থ ও প্রশাসন) সুমন দেব জানান, উল্টোপথে ব্যাটারি চালিত রিকশা চালিয়ে সেতু উপর থেকে লাফ দেওয়া শরিফুলের সন্ধান পাওয়া গেছে। যাচাই-বাছাই করে সনাক্ত করা হয়েছে সে সেতু থেকে লাফ দেওয়া শরিফুল।

তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনার মাদারীপুরে শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দাযের করা হয়েছিল। তাই তাকে শিবচর থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তিনি নিজেই পদ্মা সেতুর উত্তর থানার এসে হাজির হয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৮জুন দিবাগত রাত ২টার দিকে মাওয়া প্রান্ত হয়ে উল্টোপথে সেতুতে উঠে পরে ব্যাটারিচালিক রিকশা চালক শরিফুল। বিষয়টি টের পেয়ে সেতুর নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে ধাওয়া করেন। পরে সেতুর ২১নং পিয়ারের কাছ পৌছে রিকশা রেখে চালক নদীতে ঝাঁপ দেন। তাকে উদ্ধার করতে দুই দিন নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কাজ করলেও তাকে তখন পাওয়া যায়নি।