বিবিধ

পুলিশ সদস্যের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গেলেন এলজিইডি’র সার্ভেয়ার

  এস এম রাফি ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ , ১১:৪৪ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

এস এম রাফিঃ

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এক সার্ভেয়ারকে মোটরসাইকেল থেকে টেনে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। এতে ওই সার্ভেয়ারের বাঁ হাতের কুনুইয়ের হাড় ফেটে গেছে। শুধু তাই নয়, সড়কে পরে গিয়ে নিজের পরিচয় দেওয়ায় সার্ভেয়ারকে অকথ্য ভাষায় গলিগালাজ ও কিলঘুসি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।
রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় চিলমারী মডেল থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহত সার্ভেয়ারের নাম তাজুল ইসলাম। তিনি উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোমতাজ আলীর ছেলে এবং চিলমারী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মরত। আর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম মো.মুনিরুজ্জামান। তিনি চিলমারী মডেল থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী সার্ভেয়ার তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ রবিবার সন্ধ্যায় অফিস শেষে আমার সহকর্মী মহির সহ মোটরসাইকলে করে বাসার উদ্দেশে রওয়ানা হই। এসময় থানার সামনে এক পুলিশ সদস্য আকস্মিক হাত তুলে আমাকে থামতে বলেন। তখন আমার গাড়ির গতি ঘন্টায় ৩৫/৪০ কিলোমিটার বেগে ছিল। আমি গাড়ি থামানোর আগেই ওই পুলিশ সদস্য পেছন থেকে আমার সহকর্মী মহিরের গায়ের জ্যাকেট ধরে টান দেন। তখন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমরা দুজনেই মোটরসাইকেলসহ সড়কের ওপর পড়ে যাই। এসময় আমার বাম হাত মোটরসাইকেলের নিচে চাপা পড়ায় আমি প্রচন্ড আঘাত পাই। এ অবস্থায় আমি আমার পরিচয় দিয়ে ওই পুলিশ সদস্যকে আমাকে তোলার অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি আমাকে ওই অবস্থায় রেখে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমাকে কিলঘুসি মারেন। পরে আমাকে উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম লিচু ভাই সহ আমার সহকর্মী উদ্ধার করেন এবং নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমি কুড়িগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসককে দেখাই। চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান আমার কুনুইয়ের হাড় ফেটে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই পুলিশ সদস্য আমাকে সিগনাল দিলে আমি গাড়ি থামানোর জন্য প্রস্তুতি নেই। কিন্তু গাড়ি ব্রেক করার আগেই তিনি আমাকে গাড়ি থেকে এভাবে ফেলে দেন। আমি নিজেও একজন সরকারি কর্মচারী। আমি এ ব্যাপারে আমার কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত তাজুল ইসলামকে উদ্ধারে সহায়তাকারী চিলমারী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম লিচু বলেন, ‘এটা খুবই খারাপ ঘটনা। এভাবে একজন মোটরসাইকেল আরোহীকে ফেলে দেওয়ার কোনও মানে হয় না। ওই পুলিশ সদস্য বেয়াদবি করেছেন। একজন মানুষকে এভাবে টেনে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেওয়া মোটেই ঠিক হয়নি।’

তবে নিজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কনস্টেবল মুনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ এসব মিথ্যা কথা। টেনে ফেলে দেওয়া বা ওই সার্ভেয়ারকে গালিগালাজ কিংবা কিলঘুসি মারার ঘটনা ঘটেনি। বরং তিনি আমাকে মোটরসাইকেল লাগিয়ে দিচ্ছিলেন। আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সঠিক নয়।’

চিলমারী মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মোঃ আতিকুর রহমান বলেন, ‘এলজিইডি’র স্টাফ মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সড়কটি ভাঙাচুড়া থাকায় ব্রেক করতে গিয়ে ওই স্টাফ (তাজুল ইসলাম) পড়ে গিয়েছেন বলে জেনেছি। টেনে ফেলে দেওয়া বা কিলঘুসি মারার বিষয়টি জানা নেই।’