সম্পাদকীয়

ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরাইলী বর্বরতা!

  খুরশিদ বিন নজির আহমেদ ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ , ৫:০৭ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

ইতিহাসের পাতা চয়ন করলে দেখা যায়। ইহুদি জাতি জন্মগত ভাবেই পশুত্ব ও হিংস্র, হিংসাত্মক, চক্রান্ত প্রিয় জাতি। তাহারা মানুষের জন্য একটা আস্ত জাহান্নাম!
এই ইহুদী জাতি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকবে। সেখানকার লোকদের জীবন অতিষ্ঠ করে ছাড়বে। এমন অবস্থা করবে মানুষ তাদের কারণে জীবন নিয়ে পৃথিবীতেই থাকতে চাইবে না।

এই ইহুদী জাতি আজ অনধিকার করে ফিলিস্তিন ভুখন্ড দখল করে। সেখানকার মানুষদের উপরে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ানক নির্মম ও বর্বরতা প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রায় চার মাস অনবরত বোমাবর্ষন,গোলাবার্ষণ, ট্যাংক, মেশিনগানের মাধ্যমে গাঁজার নিষ্পাপ শিশু,যুবক, যুবতী,বৃদ্ধ আবাল-বনিতা সামরিক বেসামরিক লোকদেরকে হত্যা করে। ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডকে মৃত্যুপুরী বানিয়ে ফেলেছে।
প্রায় দশ হাজার নিষ্পাপ শিশু অনাহারে, ক্ষুধার তাড়নায় মৃত্যুবরণ করে। শতশত সুউচ্চ ভবন তাঁরা বোমা মেরে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়।সেখানে পশুর ভয়ানক চিৎকার ও মানুষের আওয়াজে বিভীষিকাময়,নাজুক অবস্থা ধারণ করেছে।
ইহুদিদের এই নির্মমতা বর্বরতা, সারা বিশ্বের মুসলমানদের ঘুম হারাম করে দেয়।

বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম পানি বিহীন মাছের ন্যায় কাৎরাচ্ছে।আর এরকম হবে না ও কেন!!!
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إنما المؤمنون إخوة،
অর্থাৎ প্রত্যেক ঈমানদার পরস্পর ভাই- ভাই।
সূরাহ হুজুরাত, আয়াত ১০।

রাসূলে পাক সাঃ এই ব্যাপারে একটি সুন্দর উদাহরণ দিয়েছেন,
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم، تري المؤمنين في تراحمهم و توادهم وتعاطفهم كمثل الجسد إذا اشتكي عضوا تداعي له سائر جسده بالسهو والحمي،

অর্থাৎ তোমরা ইমানদারগণ পরস্পরের মধ্যে মুহাববত, শাফক্বত,ভালবাসা, বন্ধনের দিক দিয়ে সবাই কে এক দেহের ন্যায় পাবে।
অর্থাৎ যখন দেহের কোন একটা অঙ্গ কষ্ট অনুভব করে। তখন যেমন পুরো দেহের অন্যান্য অঙ্গগুলো কষ্ট অনুভব করে।
ঠিক সে-ই রকম যেন পৃথিবীর কোন প্রান্তে কোন মুসলমান কষ্টে থাকলে। পৃথিবীর প্রত্যেক মুসলমানের কষ্ট অনুভব হয়।
সহীহ বুখারী, হাঃ ৬০১১।

সুতরাং গাঁজার মুসলমানদের কষ্ট হওয়া মানে আমাদের ও কষ্ট অনুভব হওয়াটা ইমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই পরিস্থিতি পুরে মুসলিম উম্মাহর জন্য কঠিন পরীক্ষা স্বরূপ।

এই কঠিনতম মুহূর্তে আমাদের কি করা উচিৎ??

কোরআনে তিনটি কথার উল্লেখ আছে।
১) সবর করা
২)নামাজের গুরুত্ব বেশি বেশি করা।
৩) তাক্বওয়া অবলম্বন করা।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يا أيها الذين آمنوا استعينوا بالصبر والصلاة، ان الله مع الصابرين،
হে ইমানদারগণ তোমরা নামাজ ও সবরের মাধ্যমে আল্লাহর ‘মদদ’ হাসিল করো।
সূরাহ বাক্বারাহ আয়াত,১৫৩।

لتبلون في أموالكم وانفسكم ولتسمعن من الذين أوتوا الكتاب من قبلكم ومن الذين اشركوا أذى كثيرا و ان تصبروا وتتقوا فإن ذلك من عزم الأمور

অর্থঃ অতিসত্বর আমি তোমাদের থেকে পরীক্ষা নিবো।জান- মাল উভয়ের মধ্যে।
ইহুদি, নাসারা,মুশরিকদের থেকে অনেক কষ্টদায়ক কথা শুনবে।
যদি তোমরা সবর করো এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করো। এটা অনেক শক্তিশালী কাজ হবে।
সূরাহ আল- ইমরান ১৮৬।

সুতরাং উপরিস্থিতে আমাদের কে ধৈর্য ধারণ করতে হবে। এবং এ ব্যাপারে আল্লাহর কাছে কোন প্রশ্ন করা যাবে না।
গুনাহের কাজ ছেড়ে দিয়ে তাক্বওয়া অবলম্বন করতে হবে। তাওবা করে ইবাদত বেশি বেশি করতে হবে।
উপরোক্ত তিন কাজের উপর আমল করে গাঁজার মাজলুম জন্য সাহায্য করা আমাদের উপর ফরজ দায়িত্ব।

রাসূলে পাক সাঃ আমাদেরকে এটাই নছীহত করে গিয়েছেন। রাসূলে পাক সাঃ এর উম্মত হয়ে তার নসিহত আদায় করা খুবই জরুরি।
রাসূলে পাক সাঃ বলেন, মুসলমানদের হক্ব বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন , و نصر المظلوم অর্থাৎ মাজলুমদেরকে সাহায্য করো।
বূখারী শরীফ হাঃ ২৪৪৫।

রাসূলে পাক সাঃ আরো বলেন, কোন মুসলমানের উপর জুলুম করা যাবে না। এবং জুলুম অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আবার জালেমের হাতে অর্পন করাও যাবে না।
المسلم اخو المسلم، لا يظلمه ولا يخذله،
এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। সুতরাং কাহারও উপর জুলুম করা যাবে না। একেবারে সম্পর্কও বাদ দেওয়া যাবে না।
সহীহ মুসলিম হাঃ ২৫৬৪।

সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রত্যেক মুসলমানদের উপর দায়িত্ব নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী গাঁজার মুসলিমদেরকে সাহায্য করা। চাই সে আমীর, বাদশাহ, বা দেশের সাধারণ কোন জনগণ হোন না কেন??
দুশমন দেরকে জুলুম থেকে প্রতিহত করা এবং তাঁর সমুচিত জওয়াব দেওয়া।
আমরা মুসলিম হয়ে যদি এই দায়িত্ব পালন না করি।
তাহলে আল্লাহর থেকে কখনো বাঁচতে পারবো না।