মাহবুব হোসেন লিটু ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৩:০০ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বীর নিবাস নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পাঁচজন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজের গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থ বছরে উপজেলায় ৩৬ জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য বীর নিবাস নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি বীর নিবাস নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৪ লাখ ১০ হাজার ৩৮২ টাকা। ৬ টি লটে ৩৬ টি বীর নিবাস নির্মাণের জন্য আলাদা আলাদা ৬ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ৫নং লটের অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। লটটির ঠিকাদার হারুন অর রশিদ হারুন।
সরেজমিন ঘুরে কথা হয় অভিযোগকারী অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে। বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক ব্যাপারী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দয়া করে আমার মত গরীব মুক্তিযোদ্ধার জন্য ঘরের বাজেট দিয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার হারুন অর রশিদ ঘরের ঠিকাদারি নিয়ে আমার সাথে তাফালিং শুরু করেছে। আমার বাড়িতে ঘর নির্মাণের জন্য ইট, খোয়া ও বালু এনেছে। সবগুলো নিম্নমানের। আমি একারণে অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর প্রতিকার চাই’।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ আমার এখানে ঠিকাদার যে মালামাল এনেছে সব নিম্নমানের। তাই আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি’। বীর মুক্তিযোদ্ধা হানিফ উদ্দিন ব্যাপারী বলেন, আমার ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। হারুন ঠিকাদার কাজ শুরু করেছে। কাজের মান একেবারে ভালো না। আমি কাজ বন্ধ করতে বলেছি। ঠিকাদার হারুন আমাকে হুমকি দিয়ে বলে কাজে বাধা দিলে বন্ধ করে দিব। আপনার আর ঘর হবে না। আমি বিচার চাই। সে কেন এভাবে বলবে।
এছাড়াও ৫ নং লটের অপর দুই মুক্তিযোদ্ধাও নির্মাণ কাজে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। এখনো একজন মুক্তিযোদ্ধার বীর নিবাস নির্মাণকাজ শুরু করাই হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার হারুন অর রশিদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তার ব্যবহার করা ফোন নম্বরটি বন্ধ দেখাচ্ছিলো,পরে আরেকটি নাম্বারে ফোন দিলে সেই ফোন নম্বরে ফোন গেলেও কোন সারা পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদ বলেন, বীর নিবাস নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধাগণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।