সারাদেশ

ভেঙ্গে পড়ছে চিলমারী সরকারী হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা

  এস এম রাফি ৮ অক্টোবর ২০২৩ , ৯:০৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দ্বার গোড়ায় পৌছাতে কাজ করছেন সরকার। এজন্য সরকার ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা পর্যায়ে ক্লিনিক, হাসপাতাল তৈরি করেছেন। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছেন। এর পরেও দুর্নীতি, তদারকি আর সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ভেঙ্গে পড়েছে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র চিকিৎসা ব্যবস্থা। চিকিৎসক, ঔষধসহ সকল কিছুতেই সংকট আর সংকট। সংকটের ভাড়ে যেন নুয়ে পড়েছে হাসপাতাল, ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। এতে ক্ষতি হচ্ছে সরকারের, প্রতারিত হচ্ছে জনগণ আর লাভবান হচ্ছে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। চিকিৎসক-সংকটের কারণে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী যথাযথ সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এছাড়াও ভেঙ্গে পড়েছে প্রশাসনিক অবকাঠামো।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও সেবার মান সেভাবে হয়নি উন্নয়ন। ২০ জন ডাক্তারসহ শুন্যপদ রয়েছে ৫২টি। বিভিন্ন শুন্যপদসহ নানা সমস্যা নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এখানে চিকিৎসকসহ ১৪৪টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৯২ জন। জরুরী প্রসূতী সেবা কার্যক্রম যেখানে ২৪ ঘন্টা চলার কথা, সেখানে চলে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। বেশির ভাগ সময় জরুরী প্রসূতী সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ঐ সময় জরুরী প্রসূতী সেবার জন্য কোন রোগী আসলে চিকিৎসক এবং নার্সগণ তাকে স্থানীয় ক্লিনিকে প্রেরনের চেষ্টা করে থাকেন। শুধু প্রসূতী রোগী নয় জরুরী বিভাগে রোগী আসলে বেশির ভাগ রোগীতে রেফার করা হয়ে থাকে কুড়িগ্রাম সদরে ফলে রোগীদের পরিবহন খরচসহ হাজার হাজার অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয় বলেও জানান রোগীর সজনরা। অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘদিন থেকে বিকল হয়ে নষ্ট হয়ে যায়, আবারো নতুন একটি এক্সরে মেশিন আসলেও টেশনিশিয়ান না থাকায় পড়েই আছে সেটিও। যার ফলে রোগীদের সামান্য পরীক্ষার জন্যই যেতে হচ্ছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও শূন্য মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট রেডিওগ্রাফি পদ। এ্যাম্বুলেন্স থাকলে নেই ড্রাইভার। স্টোর কিপারের পদ শুন্য ফলে দায়িত্ব পালনে অফিস সহায়ক থাকায় ক্ষমতার বলে কিছু স্টাফ বিভিন্ন ফায়দা লুটছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি জরুরী বিভাগে বেশির ভাগ সময় চিকিৎসক না থাকায় অনেক সময় উপসহকারী চিকিৎসক কর্মকর্তাদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হয় রোগীদের। এছাড়াও হাসপাতালের চারদিকে ময়লা আবর্জনায় ভর্তি, বিদ্যুৎ চলে গেলে ভুতুরে পরিবেশসহ খাবারের মানও নিন্মমানের বলে অভিযোগ করেন রোগীরা। শুধু তাই নয় পরিবেশ নোংড়াসাথে পরিস্কার পরিচ্ছনতারও রয়েছে অভাব। এই সব সমস্যার কারন হিসাবে প্রশাসনিক অবকাঠামোর অভাবকে দায়ি করছেন সচেতন মহল। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা খাতের দৈন্যদশা, দুর্নীতি ও মানবতাবিবর্জিত কার্যকলাপের কারণে আমরা জনসাধারণ হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা-সেবা নিতে গিয়ে প্রতিদিন নানা হয়রানি ও সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এই সব সমস্যা সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আমি প্রস্তাব পাঠিয়েছি। কিন্তু সাড়া মেলেনি।’ তিনি আরো বলেন, ‘লোকবল কম থাকলেও আমরা আন্তরিকভাবে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করছি।