সারাদেশ

‌মে‌ডি‌কে‌লে পড়ার সু‌যোগ পে‌য়ে‌ছেন বিলুপ্ত ছিটমহ‌লের মোহছেনা

  এস এম রাফি,কুড়িগ্রাম ২২ জানুয়ারি ২০২৫ , ১২:৫৭ পূর্বাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

বিলুপ্ত ছিটমহল দা‌শিয়ারছড়ার কৃষকের মে‌য়ে মোহছেনা মে‌ডি‌কে‌লে পড়ার সু‌যোগ পে‌য়ে‌ছেন। ত‌বে আ‌র্থিক অনট‌নে ভ‌র্তি ও তৎপরবর্তী লেখাপড়া চা‌লি‌য়ে নিতে অ‌নিশ্চয়তা দেখা দি‌য়ে‌ছে তার।

মোহছেনা কু‌ড়িগ্রা‌মের ফুলবাড়ী উপ‌জেলার দাশিয়ারছড়া সমন্নয়কারী গ্রামের মাওলানা মোফাজ্জল হোসেন ও মোসলেমা দম্পতির তৃতীয় মেয়ে। মোহছেনার বড় বোন মাহবুবা খাতুন মুক্তা পড়ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ও মেঝ বোন মাহফুজা খাতুন কুড়িগ্রাম মহিলা কলেজে অনার্সে অধ্যায়নরত রয়েছেন।

মোহছেনা ভর্তি পরিক্ষায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে সুযোগ পেয়েছেন। তিনি শিক্ষাজীবনে প্রাথমিক থেকেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বৃত্তি পেয়েছেন। তিনি কাশিপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এ-প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।

মোহছেনা আক্তার বলেন, সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার উপর যিনি আমাকে এত ভালো একটা পেশার জন্য মনোনীত করেছেন। আর সর্বোপরি আমার বাবা-মায়ের অবদান ছিল। পড়ালেখার পিছনে পরিশ্রম করেছি, অনেক প্রতিকূলতা পার হয়ে এই পর্যন্ত আসতে হয়েছে।

ভর্তি এবং পড়া‌শোনা চা‌লি‌য়ে যে‌তে কোনও সমস‌্যা আ‌ছে কিনা এমন প্রশ্নে মোহছেনা জানান, আর্থিকভাবে বেশি সমস্যা আছে । এখন যেহেতু আমার বাবার চাকরি বাকরি নাই কৃষি কাজ করেন। আমার বাবা এমএ পাস করেছে কিন্তু ছিটমহলে বাড়ি হওয়ায় চাকরি পাননি। আর তিন বোনকেই লেখাপড়া করতে হচ্ছে। আমাদের তো নিজস্ব জমি নাই, জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেন। যার কারণে আমাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে একটু আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন। এ সময় আমাকে যদি কেউ আর্থিকভাবে একটু সাপোর্ট দিতো তাহলে আমার জন্য খুব ভালো হতো।

চান্স পাওয়ার পেছ‌নে অনু‌প্রেরণা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই বাবা মায়ের অনুপ্রেরণা নিয়েই পড়াশোনা করছি। এরপর বড় আপু যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান তারপর থেকেই আপুর গাইডলাইন নিয়েই এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি।

শিক্ষকদের সহযোগিতা কথা প্রকাশ করে মোহছেনা বলেন, আমি ৫ম, ৮ম, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বৃত্তি পেয়েছিলাম। যার ফলে আমার কলেজে প্রাইভেট পড়তে অনেক সময় আমাকে বেতন দেয়া লাগেনি। স্যারদের সাপোর্টে পড়াশুনা করেছি।

মোহছেনার বড় বোন মাহবুবা খাতুন মুক্তা বলেন, আমরা তিন বোনেই লেখা পড়া করছি। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। এখন আমার বাবা কৃষি কাজ করেন। উনার একার পক্ষে আমাদের লেখাপড়ার খরচ দিতে সমস্যা হয়। এজন্য আমাদের পাশে কেউ দাড়ালে, আর্থিক সাপোর্ট দিলে সামনের দিনে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে সমস্যা হত না।

মোহছেনার বাবা মায়ের সঙে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।