আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক ব্যাংক সিলিকন ভ্যালি দেউলিয়া

  এস এম রাফি ১১ মার্চ ২০২৩ , ৮:১৯ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক, যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃত। বর্তমান মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিতে দেশটির অন্যান্য ব্যাংকের মতো এই ব্যাংকটিও খানিকটা তারল্য সংকটে ভুগছিল, তবে তা একেবারেই নগণ্য।

কিন্তু তারপর, মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একেবারে দেউলিয়া হয়ে গেছে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক। শুক্রবার (১০ মার্চ) ব্যাংকের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা দেশজুড়ে ব্যাংকের সব শাখা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি।

ব্যাংকটির এই অবস্থার মূল কারণ গুজব। বুধবার হঠাৎ স্পষ্ট হয়ে যায়, গুরুতর আর্থিক ঘাটতিতে ভুগছে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক। ঘাটতির পরিমাণ এতটাই যে, ব্যাংকের ব্যালান্স শিটের কিনারা করতেই প্রয়োজন অন্তত ২২৫ কোটি ডলার।

এই গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের টাকা তোলার হিড়িক পড়ে যায়। বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত হাজার হাজার গ্রাহক নিজেদের ব্যাংক হিসাব খালি করে টাকা তুলে নেন।

শুক্রবার কর্তৃপক্ষ ব্যাংকটি বন্ধ ঘোষণা দেওয়ার পর গ্রাহকদের অনেকেই আফসোস করেছেন। ডিজিটাল ব্যাংকিং ও আর্থিক পরিষেবা খাতের বিনিয়োগকারী রায়ান ফ্ল্যাভেই সিএনবিসিকে বলেন, ইউনিয়ন স্কয়্যার ভেঞ্চার্স এবং কোচুয়ে ম্যানেজমেন্টসহ কিছু মার্কিন আর্থিক ও ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান এই গুজব ছড়ানোর সঙ্গে যুক্ত। বুধবার তারা বেশ কয়েকজন গ্রাহকের কাছে ইমেইল পাঠিয়ে বলেন, এসভিপি গুরুতর তারল্য সংকটে ভুগছে। যদি ব্যাংকটিতে আপনার টাকা থেকে থাকে, দ্রুত তুলে নিন।

বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ইমেইলের স্ক্রিনশট খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এবং গ্রাহকরাও কোনো ধরনের চিন্তা না করে ব্যাংক কার্যালয় কিংবা এটিম বুথ থেকে সমানে নিজেদের আমানতের টাকা তুলে নেওয়া শুরু করেন।

রায়ান ফ্ল্যাভেই বলেন, কেউ যদি আপনাকে বলে, ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে, দ্রুত অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিন, দেরি করলে সেই টাকার কোনো হিসাব আর পাবেন না।

মানুষজন হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মতো টাকা তুলেছেন। কোনো জনসমাগম পূর্ণ থিয়েটার রুমে হঠাৎ খানিকটা ধোঁয়া দেখা গেলে কেউ যদি আগুন বলে চিৎকার করেন সে ক্ষেত্রে ওই থিয়েটারে যেমন হুড়োহুড়ি শুরু হয়, এখানকার অবস্থাও ছিল অনেকটা তেমনি।