এস এম রাফি ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১১:৫৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা।
কোনো অবস্থাতেই যেন নির্বাচন বাধাগ্রস্ত না হয় সেটাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। আর এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ যে কৌশলটি অবলম্বন করছে তাকে মোটামুটি পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায়।
আওয়ামী লীগের প্রধান কৌশল হলো সংবিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করা।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই নির্বাচন যেকোনো মূল্যে অনুষ্ঠান করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর নির্বাচন যেন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয় সেটির সব আয়োজন তারা সম্পন্ন করবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, এবারের নির্বাচন হবে স্মরণকালের সবচেয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন। প্রশাসন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনরকম বাড়াবাড়ি করবে না এবং সরকারও নির্বাচন আচরণ বিধি মেনে চলবে।
এমন একটি নির্বাচন করা হবে যে নির্বাচনকে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারবে না।
আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় কৌশল হলো এরকম একটি নির্বাচনে যেন ভোটারদের উপস্থিতি ভালো হয়। আওয়ামী লীগ অন্তত ৬০ ভাগ ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়।
এই কারণেই আওয়ামী লীগ পাড়ায় মহল্লায় কমিটি করছে এবং যারা প্রার্থী হবেন তাদেরকে প্রথম শর্তই দেওয়া হবে যে, ভোটার যেন উপস্থিত হয়। নির্বাচনে যেন কোনরকম কারচুপি বা অনিয়মের প্রশ্ন না ওঠে।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, ৫০ ভাগের বেশি ভোটার উপস্থিত থাকলেই সেই নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না।
আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে চায় এবং এই নিয়ে প্রয়োজনে সংলাপও করতে পারে বলে একটি সূত্র দাবি করছে।
তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, বিএনপির নির্বাচনে আসাটা আআওয়ামী লীগ বিপদজনক মনে করছে। কারণ বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে সাথে সাথে তারা প্রতিমুহুর্তে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তখন একের পর এক নানা রকম নিষেধাজ্ঞা এবং শর্ত দিয়ে নির্বাচনকে বিতর্কিত করবে। বরং বিএনপি ছাড়াই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাটা আওয়ামী লীগের বড় কৌশল।
তবে কোন কোন আওয়ামী লীগের নেতা মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের আগে বিএনপিতে ভাঙ্গন ধরবে। বিশেষ করে তৃণমূল বিএনপি ক্রমশ বিএনপির জন্য একটি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। ফলে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক না করুক বিএনপির অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক করার জন্য স্ব স্ব অবস্থান থেকে নির্বাচন করাতে চায়।
আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের মতো নির্বাচন করবে, জাতীয় পার্টি তাদের মতো এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে নির্বাচন করবে। কোন রকম জোট না করে ‘অনেক প্রার্থী উৎসবমুখর পরিবেশ’- এটাই আওয়ামী লীগের নির্বাচনের অন্যতম বড় কৌশল।
নির্বাচনে যেন আন্তর্জাতিক মহল বাধা না দেয় বা নির্বাচনের আগেই যেন নির্বাচন নিয়ে গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন না তোলে এই জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আওয়ামী লীগ এবং সরকার লবিং এবং জনসংযোগ বাড়াবে।
বাংলাদেশ এবং সরকারের বিরুদ্ধে যে ভুল বার্তা গুলো দেওয়া হচ্ছে তার বিপরীতে সঠিক চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে এবং আন্তর্জাতিক মহলকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে।
বাংলাদেশ সম্পর্কে যে ভ্রান্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এবং পশ্চিমা দেশগুলো আছে তা দূর করার জন্য আগামী তিন মাস ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, এই কৌশলসমুহ শেষ পর্যন্ত একটি প্রশ্নহীন নির্বাচন তারা তুলে আনতে পারবেন।