অপরাধ

যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে মামলার শিকার, বিচারের দাবি রাবি শিক্ষিকার

  এস এম রাফি ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ , ৫:৪৫ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ

‘প্রতিরোধে স্লোগানে কাঁপাও যৌন নিপীড়কের ভিত’ স্লোগানে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং যৌন নিপীড়কের দ্রুত বিচার চেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন। তার অষ্টম শ্রেনী পড়ুয়া কিশোরীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিচার চেয়ে মামলা করেছিলেন । মামলা চলমান থাকার পরও অভিযুক্ত যৌন নিপীড়ক নিজেই ভুক্তভোগীর মায়ের বিরুদ্ধে করেছেন পাল্টা মামলা।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটোরিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ডাক্তার রাজুর দ্রুত শাস্তির দাবি জানান। ডাক্তার রাজু রাজনৈতিক ইন্ধনে এসব কর্মকাণ্ড করছেন বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগীর মা সহযোগী অধ্যাপক ড. সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, যৌন অপকর্মের দায়ে অভিযুক্ত ডা. রাজুর বিরুদ্ধে উপচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে। বহিস্কার হওয়ার পর থেকে আমার সাথে যারা কাজ করছে তাদের হুমকি দেয়, কেসের ভয় দেখাচ্ছে এবং মীমাংসা করার আহবান ইত্যাদি করে যাচ্ছে রাজু। গত ১৩ নভেম্বর রাজু আমিসহ আরো ২ জনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা দেয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং আসল ঘটনাকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।

এসময় তিনি আরো বলেন, রাজু আমেনা ক্লিনিকে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে অস্বীকার করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। রাজুর সাথে বেশকিছু সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষক ও কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। রাজুর দ্বারা কৃত যৌন হয়রানির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই। রাজু ‘অসহায়ত্ব চিকিৎসার’ নিয়মাবলি পরোয়া না করে দীর্ঘদিন যাবত সে অনেককে নিপিড়ন করে যাচ্ছে। তাই অনতিবিলম্বে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও মামলায় গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

অভিযুক্ত ডা. রাজু বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসক। এছাড়া তিনি রাজশাহী মহানগর যুবলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বোরাক আলী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুবা কানিজ কেয়া, মহিলা পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোবাররা সিদ্দিকাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে নগরীর তালাইমারি এলাকার আমেনা ক্লিনিকে যৌন হয়রানির এ ঘটনা ঘটে। পরে ৩১ অক্টোবর সকালে ভুক্তভোগী শিশুর মা বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ডা. রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে। উপচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডা. রাজুকে সাময়িক বহিস্কার করে। আবার গত ১৩ নভেম্বর ডা. রাজু আহমেদ(১৪৯/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/) ধারায় ভুক্তভোগীর মাসহ ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।