এম এ কাইয়ুম মাইজভান্ডারী, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:২৮ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে জমিজমা সংক্রান্ত বাড়ির সীমানা বিরোধের জেরে মোঃ কালাচাঁন সরদার (৪৮) নামে এক ব্যক্তিকেপিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিবেশী দুই যুবক।
এ ঘটনায় ৫/৬ জন অজ্ঞাতসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে লৌহজং থানায় আভিযোগ দায়ের করেছে নিহতের স্ত্রী সাহানা বেগম৷
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার দক্ষিণ হলদিয়া গ্রামের ছাতি মসজিদ এলাকায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ৪ নারীকে আটক করেছে পুলিশ। বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে কালাচানকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রতিবেশীরা জানান। কালাচান একটি সিগারেট কোম্পানির ডেলিভারিম্যান হিসবে কাজ করতেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম চার কন্যাসন্তানের দরিদ্র পিতা কালাচানকে হারিয়ে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেশী আবুল হোসেন জানান, কালাচানের সাথে প্রতিবেশী নিজাম সরদার ও তার ভাই নুর ইসলাম সরদারের সাথে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। অভিযুক্ত হিরু নিজাম সরদারের ও বাবু নুরু ইসলাম সরদারের ছেলে। হিরু ও বাবু মাদক মামলার আসামি হিসেবে মঙ্গলবার আদালতে হাজিরা দিতে যায়। সেখান থেকে এসে কোনো কারণ ছাড়াই কালাচানের বাড়ির বেড়া ভেঙে ঘরে হামলা করে। এ সময় কালাচানের সেজো মেয়ে সাদিয়া বাধা দিতে গেলে তাকে মারধর করে হিরু ও বাবু। পরে তারা কালাচানকে বাড়ির সামনের রাস্তায় পেয়ে কাঠের চ্যালা দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে মাথাসহ শরীরের নানা স্থানে আঘাত করে।
প্রত্যক্ষদর্শী মনির হোসেন বেপারী বলেন, কালাচান আমাদের সাথে মসজিদে জামাতে আসর নামাজ পড়ে আসে। এরপর সে বাড়িতে গিয়ে শুনতে পায় হিরু ও বাবু বাড়িঘরে হামলা করেছে। এরপর সে বাড়ির দলিল ও কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহিন সরদারের বাড়িতে যায়। এ সময় ইউপি সদস্য শাহিন বাড়িতে ছিলেন না। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কালাচানকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হিরু ও বাবু। কালাচানকে রক্ষা করতে গেলে হিরু-বাবু আমাদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মারা যায় কালাচান।
আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে কালাচানের বাড়িতে গেলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। তার চার মেয়েসহ প্রতিবেশীদের কান্নায় সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মেজো মেয়ে সুমাইয়া জানান, তার বাবাকে হামলা করা ররক্তাক্ত স্থানটি বালতি এনে ধুয়ে ফেলে বাবুর স্ত্রী মাবিয়া। লৌহজং থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবুর স্ত্রী মাবিয়া বেগমকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।