ডেস্ক নিউজ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১২:২০ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আট শতাধিক ব্যক্তি নিহত এবং সহস্রাধিক আহত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হয়েছে সাধারণ মানুষ। এমনকি ঘরে থাকা শিশুকেও গুলিতে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫০ জন সদস্যও নিহত হয়েছেন এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ঘটনাগুলোর যেগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে সেগুলোর তদন্ত শুরু করার জন্য জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং দল শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে কাজ শুরু করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমন্ত্রণে ওই দল কাজ করবে এবং তাদের পূর্ণ সহযোগিতা দেবে সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে শনিবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বা পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে তারা তাদের কাজ শুরু করবেন।
জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের মধ্যে একটি টেকনিক্যাল টিম থাকবে, যা ফরেনসিক, আইন এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত। কর্মকর্তা জানান, এটি বাংলাদেশের জন্য প্রথম অভিজ্ঞতা, তাই আমাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
জাতিসংঘ দলের কর্মপরিধি সম্পর্কে জানা গেছে, তারা জুলাই ১ থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তদন্ত করবে। তারা এই ঘটনাগুলোর কারণ (রুট কজ) পর্যালোচনা করবে এবং ন্যায়বিচার ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে সুপারিশ করবে।
আগস্টের শেষ সপ্তাহে জাতিসংঘের অগ্রগামী দলটি ঢাকায় এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ছাত্র, সুশীল সমাজ, মিডিয়া এবং অন্যান্য পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং তদন্তের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
সুশীল সমাজ, সত্য প্রকাশ, ক্ষতিপূরণ, এবং সামাজিক মতভেদের মধ্যে মিটমাট বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশের বংশোদ্ভূত একজন ব্যক্তির হাতে। তিনি তার কাজের জন্য অত্যন্ত দক্ষ।
প্রতিনিধিদলটি কতদিন বাংলাদেশে থাকবে সে বিষয়ে কর্মকর্তারা জানান, দলটির নিজস্ব ধারণা আছে, এবং বাংলাদেশ তাদের প্রয়োজনীয় সময় দেবে। প্রয়োজনে অন্য কোন দল আসতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, আগস্টের ২২ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত মানবাধিকার হাইকশিনারের অফিসের এশিয়া- প্যাসিফিক সেকশনের প্রধান রুরি ম্যানগোভেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করেছে।