রাবি প্রতিনিধি: ৩১ আগস্ট ২০২৪ , ৮:১৩ অপরাহ্ণ প্রিন্ট সংস্করণ
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাঞ্জুর আল মতীন বলেছেন, এই লড়াই যেমন ঢাকার, তেমনি এটা গোটা বাংলাদেশেরও। শুধু ঢাকা নিয়ে থাকলে এই বিপ্লব সম্ভব হতো না। শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ মিনার মুক্তমঞ্ছে আয়োজিত ‘আগামীর বাংলাদেশ: তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন। রাবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা এই সেমিনারের আয়োজন করে।
মাঞ্জুর আল মতিন বলেন, আমরা দেখেছি, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে মাদ্রাসা, ইংরেজি মাধ্যম ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রুখে দাঁড়িয়েছে। এই লড়াই যেমন ঢাকার, তেমনি এটা গোটা বাংলাদেশেরও। এটা ভুলে গেলে চলবে না। রাজশাহীতে মানুষ জীবন দিয়েছে, রংপুরে আবু সাঈদ জীবন দিয়েছে। ঢাকায় আমার ছোটো ভাই ফারহানসহ অনেকে জীবন দিয়েছে। শুধু ঢাকা নিয়ে থাকলে এই বিপ্লব সম্ভব হতো না।
তিনি বলেন, এখন যারা ক্ষমতায় বসেছেন, তাদের বুঝতে হবে, শুধু কেন্দ্রে বসে শাসন করলে চলবে না। আপনাদের রাজশাহীতে আসতে হবে। আপনাদের শুনতে হবে এদেশের প্রান্তিক মানুষের কথা। অটোচালক- রিকশাচালকদের কথাও শুনতে হবে। সবাইকে নিয়েই বাংলাদেশ। আমার বাড়ির কাছে দেখেছি যখন শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে গেছে, তখন শ্রমজীবি মানুষরা নেমে এসেছে। ধর্মভীরু, হিন্দু-মুসলিম, বাম-নাস্তিক সবাই মিলেই বাংলাদেশ। সবাই আমরা একসাথে হয়েছি বলেই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে পারছি।
তিনি আরও বলেন, অনেকে বলছেন, তরুণরা কি জানে? তারা উপদেষ্টা হয়ে বসছেন কেনো? আমার বক্তব্য হলো, এই তরুণরা অনেক কিছুই জানে, আমরা যা জানি না। আমরা বলি মাদ্রাসা, ইংরেজি মাধ্যম ও বাংলা মাধ্যমের ত্রিমুখী শিক্ষাব্যবস্থা ঠিক না করলে দেশকে একতাবদ্ধ করা যাবে না। কিন্তু তরুণরা করে দেখিয়েছে।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, আমার কাছে এ সময়টা অসম্ভব আনন্দ, বেদনা, আশংকা এবং আশার সময়। এসব কিছু নিয়েই আমি বেঁচে আছি। আজকের এ সমাবেশটা হলো আনন্দ। আর বেদনার হলো সম্ভবত আজকেও আমরা একজন তরুণকে হারিয়েছি এবং শত শত সন্তান তারা তাদের চোখ হারিয়েছে। জানি না তারা কখনো পৃথিবীর আলো দেখতে পারবে কিনা। আশঙ্কা হলো গত ১৫ গত বছরে যেই অশুভ শক্তি ও স্বৈরাশাসক জন্ম হয়েছে এবং তাদেরকে মদদ দিয়ে যারা মাথায় তুলে রেখেছে তাদের জন্য।
সেমিনারে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম সালমান সাব্বিরের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার পরিষদের সদস্য সারা আহমেদ সাবন্তী, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইন বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদুল ইসলামসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় রাবিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।